সন্দেশখালির দুর্ঘটনা মামলায় ফের গ্রেপ্তার উত্তম, সঙ্গে ধৃত কুদ্দুস

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

সন্দেশখালিতে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্ত। ঘটনার চার দিনের মাথায় শনিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করল রুহুল কুদ্দুস তরফদার এবং সুশান্ত সর্দার ওরফে উত্তম সর্দারকে। ধৃতদের বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশের তরফে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, উত্তম সর্দার নামটি নতুন নয়। সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান। এবার ফের পুলিশের জালে উত্তম। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়েই তদন্তকারীদের সন্দেহ ক্রমশ জোরালো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রুহুল কুদ্দুস সরবেড়িয়া এলাকায় ভাড়া থাকেন এবং পেশায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজবাড়ি এলাকা থেকে। অন্যদিকে উত্তম সর্দারকে ধরা হয় পোলেরহাট এলাকা থেকে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভোলানাথ ঘোষ যে ৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন, সেই তালিকায় এই দুই অভিযুক্তের নাম ছিল না বলেই খবর। তবু তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার দিন কুদ্দুস ভোলানাথ ঘোষের গাড়ির উপর নজর রাখছিলেন। গাড়িটি কোন কোন রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে, সেই সমস্ত তথ্য নিয়মিতভাবে অন্যদের জানানোই ছিল তাঁর দায়িত্ব। তদন্তকারীদের অনুমান, এই নজরদারির মাধ্যমেই ঘটনার নেপথ্যে করা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয়। একই সঙ্গে উত্তম সর্দারও এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে পুলিশের সন্দেহ।

উল্লেখ্য, উত্তম সর্দারকে শেখ শাহজাহানের ‘ডান হাত’ হিসেবেই এলাকায় পরিচিতি। তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ইডি’র উপর হামলার ঘটনার পর তাঁকে ছয় বছরের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড করা হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক তাঁর সাসপেনশনের কথা ঘোষণা করেন। দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেদিন বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তিনি জামিনে মুক্তি পান।

এবার দুর্ঘটনা মামলায় ফের গ্রেপ্তার হওয়ায় সন্দেশখালির ঘটনাক্রমে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, পুলিশ হেফাজতে রেখে জেরা করলে ঘটনার নেপথ্যে থাকা আরও নাম ও তথ্য সামনে আসতে পারে। এখন আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে প্রশাসন এবং স্থানীয় মানুষজন।