কলকাতার নিউ মার্কেট চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ১২৭ বছরের পুরনো রক্সি সিনেমা হল এবার ফিরছে নতুন রূপে। ঐতিহ্যবাহী এই নির্মাণটি আধুনিক রূপ পেলেও তার পুরনো সৌন্দর্য থাকবে অটুট। এই ভাবনাকে সামনে রেখেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা ও ক্রেডাই কলকাতা।
জানা গিয়েছে, রক্সির অন্দরের আর্ট ডেকো ধাঁচের সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখেই কাজ হবে। অন্দরসজ্জার দায়িত্ব নিচ্ছে ক্রেডাই কলকাতা। সূত্রের খবর, তারাই এই প্রকল্পে ৫ কোটি টাকা অনুদান দেবে। বাইরে থেকে ভবনের কাঠামোগত সংস্কার করবে পুরসভা। গোটা কাজটির দেখভাল করছে কলকাতা হেরিটেজ কমিটি।
রক্সি হল প্রথমে ১৯০৮ সালে অপেরা হাউস হিসেবে তৈরি হয়েছিল। পরে ১৯৪১ সালে এটি এক পর্দার সিনেমা হলে রূপান্তরিত হয়। শহরের একমাত্র অর্ধচন্দ্রাকৃতি হল রক্সি। যেখানে তিনটি স্তরে বসার ব্যবস্থা ছিল। শুধু সিনেমা নয়, একসময় এটি ছিল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেরও কেন্দ্রস্থল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, উদয়শঙ্করের মতো কিংবদন্তিরা এখানে অনুষ্ঠান করেছেন বলে জানা যায়।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই উদ্যোগকে শহরের ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করেছেন। পুরসভার হেরিটেজ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, ‘পুরো কাজ হেরিটেজ কমিটির নিয়ম মেনেই হবে। দোকানদারদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে যাতে সংস্কারের কাজ বাধা না পায়। তবে সিনেমা হল হিসেবে রক্সি আবার চালু হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পুরসভার নেই। আমাদের দায়িত্ব ভবনটির সংরক্ষণ ও সংস্কার করা।’
রক্সিকে ঘিরে অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন, পুরনো স্মৃতিকে ধরে রেখেই কি নতুন করে শহরের সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্রে পরিণত হবে রক্সি? উত্তর সময়ই দেবে। তবে শহরের বুকে এক ইতিহাসের নতুন প্রাণ পাওয়ার পথে কোনও সংশয় নেই।