পুজোর আগে আবারও শহরের রুফটপ রেস্তোরাঁগুলির দরজা খুলছে। তবে এবার আরও কঠোর নিরাপত্তা বিধি মেনে। অগ্নিকাণ্ড, ভিড় সামলানো ও উদ্ধারকার্যের ঝুঁকি এড়াতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত বিশেষ কমিটি। বুধবার এসওপি প্রকাশ করে এই কমিটি।
নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, রুফটপ রেস্তোরাঁর জন্য সর্বাধিক ৫০ শতাংশ ছাদ ব্যবহার করা যাবে। বাকি অংশ খালি রাখতে হবে উদ্ধারকার্যের সুবিধার্থে। রাস্তার দিকের অংশ ফাঁকা রাখা বাধ্যতামূলক, যাতে বিপদের সময় হাইড্রোলিক ল্যাডার ব্যবহার করে মানুষকে নামানো যায়। প্রতিটি রেস্তোরাঁয় অন্তত দুটি সিঁড়ি রাখতে হবে, কোনও সিঁড়ি এনক্লোজ বা কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো যাবে না। স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডে যেভাবে আটকে পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি আটকাতেই এই ব্যবস্থা।
রুফটপ রেস্তোরাঁয় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। তার বদলে মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন বা ইন্ডাকশন কুকার ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি রেস্তোরাঁয় সিসিটিভি নজরদারি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
কোনও আবাসিক ভবনের ছাদে রেস্তোরাঁ চালানো যাবে না। শুধু কমার্শিয়াল ভবন বা ব্যবসায়িক এলাকাতেই রুফটপ রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি মিলবে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কলকাতা পুরসভার কাছে মালিকদের মুচলেখা জমা দিতে হবে যে, আগামী তিন মাসের মধ্যে সব নিয়ম কার্যকর করা হবে। দমকল, পুলিশ ও পুরসভা মিলিতভাবে সরেজমিনে পরিদর্শন করবে। যদি দেখা যায় শর্ত মানা হচ্ছে না, তবে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এবার থেকে ছাদকে কমন এরিয়া হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই আলাদা করে ছাদ বিক্রি করা যাবে না। নতুন বিল্ডিংয়ের অনুমোদনের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশই কার্যকর হবে। মেয়র বলেন, ‘মানুষের জীবন সবার আগে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন, তাই করছে রাজ্য সরকার।’ ফলে শহরের রুফটপ রেস্তোরাঁয় পুজোর আগে আবার ভিড় জমলেও এবার সেখানে কড়া নজরদারিতে নিরাপত্তাই থাকবে প্রধান অগ্রাধিকার।