সাতসকালে চাঞ্চল্য উত্তর কলকাতার কাঁকুড়গাছি এলাকায়। শনিবার সকালে ঘোষবাগান অঞ্চলে হঠাৎই ভেঙে পড়ে একটি প্রাচীন বাড়ির অংশ। বাড়িটি প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বলে জানা গিয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন এক বৃদ্ধা ও দুই শিশু। আহতদের দ্রুত কাঁকুড়গাছি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দুই শিশুকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও, আহত বৃদ্ধা এখনও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঐতিহাসিক এই বাড়িটি এলাকায় ‘জমিদার বাড়ি’ নামে পরিচিত। বহু পুরনো ইট, বালি ও সুরকির গাঁথনিতে নির্মিত বাড়িটির অবস্থা বিগত কয়েক বছর ধরেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি টানা কয়েক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিতে তা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শনিবার সকালে হঠাৎই বাড়ির একটি অংশ ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শান্তিরঞ্জন কুন্ডু বলেন, ‘এই জমিদার বাড়িটির বয়স ২০০ বছরেরও বেশি। দীর্ঘদিন ধরে তা জীর্ণ অবস্থায় ছিল। ধারাবাহিক বৃষ্টির ফলে বাড়ির ভিত আরও দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। পুরসভার তরফে বিল্ডিং বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরপরই বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা ভেঙে পড়া বাড়িটি পরিদর্শন করেন। পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই বাড়ির বিপজ্জনক অংশগুলি দ্রুত ভেঙে ফেলা হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সেই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।
বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, উত্তর কলকাতায় বহু পুরনো বাড়ি রয়েছে যেগুলির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাড়িকে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করে সেখানে নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। কোনও বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকলে তার বিপজ্জনক অংশ ভেঙে ফেলার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বর্ষায় কলকাতায় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তার ফলে শুধু রাস্তাঘাট নয়, শহরের বহু পুরনো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে নাগরিকদের পুরনো ও বিপজ্জনক বাড়ি সম্পর্কে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।