নৈহাটির বড়ো মা-র মন্দিরে পুজো দিয়ে দিন-দুয়েক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলেন নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সনৎ দে। মঙ্গলবারের সকালেও ধরা পড়লো একই চিত্র। এদিন নৈহাটি টাউনের ৩ এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন তিনি। জনসংযোগের বিশেষ কায়দা অবলম্বন করে কখনও তিনি হিন্দিভাষী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আবার কখনও প্রবীণ নাগরিকদের পাশে বসে তাঁদের সমস্যা শুনেছেন স্থির-হৃদয়ে। এখানেই শেষ নয়, আরজি কর আবহে রাজ্যের নারী নিরাপত্তা প্রশ্ন-চিহ্নের মুখোমুখি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি মহিলাদের সঙ্গেও কথা বলে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা এবং অভাব-অভিযোগের বিষয়গুলি বিস্তারিত শুনেছেন। এদিন ৩ এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ মানুষের সঙ্গেই প্রত্যক্ষ জনসংযোগ করেন সনৎ দে। নির্বাচনে জয়ী হলে আগামী দেড়বছরের মধ্যে তাঁর পরিকল্পনা কী কী, সেই প্রসঙ্গ বিস্তারিত তুলে ধরেছেন সনৎ জনসাধারণের সামনে। পাশাপাশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের আস্থাও অর্জন করেছেন। এদিন স্থানীয়দের উষ্ণ অভ্যর্থনা তাঁর প্রচারকে আরও জোরদার করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে নৈহাটি কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে টানা তিনবার বিধায়ক হয়েছেন পার্থ ভৌমিক। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনে পার্থ তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রটি ফাঁকা হয়ে যায়। আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের আরও পাঁচটি কেন্দ্রের সঙ্গে এই আসনেও হবে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরই সাংসদ পার্থ বলেছিলেন, ‘৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে সনৎ-কে জিতিয়ে আনা আমাদের লক্ষ্য। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে কথা দিয়েছি। প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের কর্মীরা নেমে পড়েছেন ভোটের প্রচারে।’ প্রসঙ্গত, নৈহাটি পুরসভার পুর পারিষদ সদস্য সনৎ দে। প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশিত হওয়া মাত্রই দলীয় নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছার ঢল নেমেছিল। সনৎ-এর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র, যিনি বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক। নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে নৈহাটি পুরসভা এবং চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত। তার সবই বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। ভোটযুদ্ধের আগে খানিকটা বাড়তি মনোবল নিয়েই মাঠে নামবে শাসকদল। তৃণমূল এবং বিজেপি উভয় প্রার্থীই বড়ো মা-র পুজো দিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। তবে বড়মার আশীর্বাদে শেষ হাসি কে হাসবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।