২০১৯ সালে ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর ভূগর্ভস্থ টানেল খননের সময় ভয়াবহ ধস নেমেছিল বউবাজারে। মুহূর্তে ভেঙে পড়েছিল একের পর এক বাড়ি। প্রায় ২৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে যায়, গৃহহীন হয়ে পড়েন শতাধিক মানুষ। সেই ক্ষত এখনও বহন করে চলেছে গোটা এলাকা। বহু পরিবার অস্থায়ী আশ্রয়ে কাটাচ্ছেন দীর্ঘদিন।
এই পরিস্থিতিতেই সোমবার কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে বিশেষ বৈঠকে বসলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেএমআরসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) এ. কে. নন্দী, স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে ও বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে মেয়র সরাসরি নির্দেশ দেন, ২০২৭ নয়, ২০২৬ সালের অক্টোবরের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে।
মেয়র জানান, ‘বাড়িগুলো খুব ছোট। তাই তিন-চার মাসের মধ্যেই একটি বাড়ি তৈরি হয়ে যেতে পারে। আমাদের ধারণা, এক বছরের মধ্যেই সমস্ত বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ করা সম্ভব।’ তিনি আরও যোগ করেন, গৃহহীন পরিবারগুলিকে দ্রুত বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়াই এখন পুরসভা ও মেট্রোর প্রধান দায়িত্ব।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দু’মাসের মধ্যে বউবাজারে আটকে থাকা টানেল বোরিং মেশিন বার করবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এর পরেই শুরু হবে বাড়ি তৈরির কাজ। পাশাপাশি, বউবাজারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও গৃহীত হয়েছে। আগামী দশ বছর ধরে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রেলের ঝাঁকুনির প্রভাবে নতুন নির্মাণে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত খতিয়ে দেখা হবে।
এছাড়া, ধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জল ও নর্দমার লাইন পুরসভা নিজের উদ্যোগে সারিয়ে দেবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রতি তিন মাস অন্তর পুরসভাকে কাজের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেবে। পুরসভা ও মেট্রো যৌথভাবে একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবে। মেয়র জানান, পুরসভা চাইছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গৃহহীন মানুষদের তাদের নিজের বাড়িতে ফেরানো হোক। সেই লক্ষ্যেই নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।