সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে প্রধান ইয়ার্ড পুনর্নির্মাণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প

ফাইল চিত্র

দেশের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোকে উন্নত ও আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল নেটওয়ার্কের একটি প্রধান কেন্দ্র এই স্টেশনকে আরও উন্নত করে তুলতে ট্রেন চলাচল ও তার সঙ্গে যুক্ত আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। সাঁতরাগাছি স্টেশন একটি টার্মিনাল স্টেশন। বেশ কয়েকটি মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন সাঁতরাগাছি থেকে তাদের যাত্রা শুরু করে এবং বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রা শেষ হয় সাঁতরাগাছিতেই। তাই এই স্টেশন এবং ইয়ার্ডের পুনর্নির্মাণ অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাঁতরাগাছিতে নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ, পারিপার্শ্বিক এলাকার উন্নয়ন, যাত্রীদের সুবিধা ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে সাঁতরাগাছি স্টেশনে। এর পাশাপাশি, নতুন প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ, ফুট ওভার ব্রিজ, লিফট, এস্কেলেটর, ট্র্যাভেলেটর এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বর্তমানে নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সিঁড়ি সহ ২ টি ফুট ওভারব্রিজ, পাতাল রেল, সার্কুলেটিং রোড, এলিভেটেড পার্কিং, শালিমার স্টেশন থেকে সাঁতরাগাছি স্টেশন পর্যন্ত জল সরবরাহ পাইপ লাইনের কাজ, আংশিক গ্রেড রোড নির্মাণের মতো কাজগুলি এগিয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলসূত্রে জানানো হয়েছে,  সাঁতরাগাছি ইয়ার্ড চালু হওয়ার পর, নতুন সাঁকরাইল-সাঁতরাগাছি সংযোগ লাইনের সুবিধা গড়ে তোলা হবে।  সাঁকরাইল-আন্দুলের মধ্যে একটি ফ্লাইওভার তৈরি হবে, যা রেল চলাচলকে আরও মসৃণ করবে। সাঁকরাইল-সাঁতরাগাছি সংযোগ লাইন চালু হওয়ার পর, সাঁতরাগাছি ইয়ার্ডে শালিমার স্টেশনের দিকে যাওয়া ডাউন ট্রেনগুলি পাঠানো সুবিধেজনক হবে। অন্যদিকে  উত্তরপ্রদেশ অভিমুখের সাঁতরাগাছি-আন্দুলের মধ্যে একটি অতিরিক্ত লাইনের সুবিধা থাকবে। এর ফলে বর্তমান মৌরিগ্রাম ফ্লাইওভার লাইনের বোঝা কমবে।


এছাড়াও, সাঁতরাগাছিতে দুটি অতিরিক্ত প্ল্যাটফর্মের সুবিধা থাকবে যা হাওড়া ও শালিমার স্টেশনে ভিড় কমাতে কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ট্রেনের জন্য সাঁতরাগাছির পিএফ নং-২ ও ৩-এর দৈর্ঘ্য বাড়ানো হবে। সাঁতরাগাছির ডিএন লুপ লাইনকেও একটি সাধারণ লুপ লাইনে রূপান্তরিত করা হবে যাতে উভয় দিকের যানবাহন চলাচল করতে পারে।

উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হওয়ার পর ট্রেন পরিষেবা উন্নত করা হবে। উন্নত করা হবে সময়ানুবর্তিতা এবং গড়ে তোলা হবে যাত্রীদের সুবিধার্থে নানা ব্যবস্থা। এই আধুনিকীকরণ প্রকল্পটি শুধু স্টেশনের পরিচালন ক্ষমতাই বৃদ্ধি করবে না, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে আরও দক্ষ রেল পরিষেবাও নিশ্চিত করবে বলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে।

রেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, এই উন্নয়নমূলক কাজ চলাকালীন যাত্রীরা কিছুদিনের জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। ভবিষ্যতে নির্বিঘ্ন ট্রেন চলাচলের জন্য এবং এই আধুনিকীকরণের কাজে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য যাত্রীদের কাছে রেলের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছে।