দুর্যোগেও বিজেপিকে পাশে পেল না কলকাতা

প্রতীকী ছবি

পুজোর আগে অস্বাভাবিক বৃষ্টির পর বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল কলকাতা শহর। প্রাণপন চেষ্টা করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে পুরসভা ও প্রশাসন। কয়েকটি এলাকা বাদ দিলে বর্তমানে কলকাতা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। কিন্তু শহরের এই দুর্দিনে সরকারের সমালোচনা, রাজনীতি ও লঘু রসিকতা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল ভারতীয় জনতা পার্টিকে। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে জনসংযোগের জন্য একটা বড় সুযোগ যে দলের নেতাকর্মীরা হাতছাড়া করলেন তা বলাই বাহুল্য।
গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত কলকাতায় অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুরসভা, সরকার ও সিইএসসির ভূমিকা। এই রকম অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে পরিস্থিতি সামলানো কার্যত অসম্ভব হলেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন একথা মানতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি কলকাতাবাসীর জন্য পথে নামবেন এটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু তা না করে ২–৩টি সাংবাদিক বৈঠক করেই ক্ষান্ত থাকলেন নেতৃত্ব। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গেল তাঁদের লঘু রসিকতায়। এই পরিস্থিতিতেও রাজনীতি করলেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বার্থে দলের তরফে সংগঠিত কোনও প্রয়াসই করতে দেখা যায়নি। পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে কোনও নেতানেত্রী পথে নামতেও দেখা গেল না।
দুর্যোগের পর মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি। পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও নিজের জেলায় বসে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। বুধবার বিকেলে বিজেপি নেত্রী মীনাদেবী পুরোহিত ও কাউন্সিলর সজল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতার এই পরিস্থিতির জন্য পুরসভা ও সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাজ্য সভাপতি আশ্বাস দিয়েছিলেন, দুর্গত এলাকায় দলের তরফে ক্ষতিপূরণ ও সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু এর জন্য সংগঠিতভাবে কোনও কর্মসূচিই নেওয়া হয়নি। কাউকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেও দেখা যায়নি। দলের কোনও নেতৃত্বকেই কলকাতা শহরের কোনও জলমগ্ন এলাকায় দেখা যায়নি।
 প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সব সময় দুর্যোগকে সুযোগে পরিণত করার কথা বলেন। কিন্তু তাঁর এই আপ্তবাক্য তাঁর দলের নেতা কর্মীরাই মানলেন না। কলকাতায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিজেপি পথে নামলে নির্বাচনের আগে তা ইতিবাচক ফল দিত বলেই মনে করছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদরা।