টানা ভারী বৃষ্টির জেরে শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বড়সড় ক্ষতির ছবি ধরা পড়েছে। এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলি মেরামতির কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। ইএম বাইপাস, ডায়মন্ড হারবার রোড-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তৈরি হওয়া গর্ত ভরাটের কাজ চলছে রাতভর। তবে পুরসভা জানিয়েছে, আপাতত অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া শুকনো থাকলেই এই প্রাথমিক মেরামতির কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, যাতে রাস্তায় যান চলাচলে সমস্যা না হয় তাই পিচ দিয়ে প্রাথমিকভাবে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। তবে এটা সাময়িক সমাধান, আসল রি-সারফেসিং বা পুরো রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ সাধারণত শীতকালের শুকনো আবহাওয়াতেই করা হয়ে থাকে।
শহরের একাধিক জায়গা যেমন, বেহালা, পাটুলি, হাইল্যান্ড পার্ক সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার অবস্থা খানিকটা খারাপ। বাঘাযতীন রেল ব্রিজের উত্তর ঢালে রাস্তার বেহাল দশা নিয়েও বহু অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি ৭০ মিটারের রাস্তা এতটাই খারাপ হয়েছে যে গাড়িগুলিকে রীতিমতো হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হচ্ছে। সেই কারণে ওই রাস্তায় প্রায় আধ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাফিক লাইন তৈরি হয়েছিল।
যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, একটি রাস্তা পার হতে গিয়ে অনেক সময় ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগছে। নাগরিকদের দাবি, শুধু অস্থায়ী সমাধান নয়, এবার দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা জরুরি। পুরসভার একাংশ অবশ্য স্বীকার করেছে, শহরের কিছু এলাকায় সমস্যা এখনও কিছুটা রয়েছে, যার ফলে জল জমে রাস্তা আরও দ্রুত ভেঙে পড়ছে। হাইল্যান্ড পার্কের আশেপাশের এলাকাতেও রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘পুরসভা সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলেছে। রাস্তায় গর্ত থাকলে তা দ্রুত সারানো হচ্ছে। বৃষ্টির প্রকোপ সামান্য কমলেই কাজে নামছে পুরকর্মীরা।’
বিশেষত প্রবীণ নাগরিকদের জন্য এই ভাঙাচোরা রাস্তা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যদিও রাতভর পুরসভার দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন অনেকে, তবে শহরবাসী এবং বিশেষজ্ঞরা চাইছেন আরও স্থায়ী, পরিবেশ সহনশীল এবং শক্তপোক্ত রাস্তাঘাটের পরিকাঠামো। উন্নত মানের নির্মাণসামগ্রী, নিয়মিত পর্যালোচনা এবং পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী কোনও সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।