আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে প্রাণী গায়েবের অভিযোগ ভিত্তিহীন

ফাইল চিত্র

বহু বিতর্কের পর অবশেষে স্পষ্ট হল আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রাণী গায়েব হওয়ার রহস্য। বন দপ্তরের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, একটিও প্রাণী চিড়িয়াখানা থেকে নিখোঁজ হয়নি। আসল সমস্যা ছিল কেন্দ্রের প্রকাশিত রিপোর্টে তথ্যের গরমিলে। সেই তথ্যের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল।

বন দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ যে তথ্য কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিল, তাতে কোনও ভুল ছিল না। কিন্তু কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত রিপোর্টে যে সংখ্যার গরমিল দেখা গিয়েছিল, তার সংশোধন চেয়েও রাজ্য সাড়া পায়নি। রাজ্যের বন দপ্তরের তদন্ত রিপোর্টে এই ভুল স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই ঘটনার সূত্রপাত হয় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলার পর। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অভিযোগ করে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে চিড়িয়াখানায় যেখানে ৬৭২টি প্রাণী ছিল, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫১-এ। অর্থাৎ ৩২১টি প্রাণী গায়েব। শুধু তাই নয়, ওই সংস্থার দাবি ছিল, গত ৩০ বছর ধরে একইভাবে প্রাণী ‘উধাও’ হচ্ছে। সেজন্য গত দশ বছরের হিসাব আদালতের মাধ্যমে তলব করা হোক।


এই অভিযোগের পরই চিড়িয়াখানার ডিরেক্টরকে বদলি করে আভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দেয় রাজ্যের বন দপ্তর। বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ইতিমধ্যেই সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছেন। যদিও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নারাজ তিনি।

বন দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, তদন্তে দেখা গিয়েছে, চিড়িয়াখানা থেকে কোনও প্রাণী গায়েব হয়নি। দেশের কোনও চিড়িয়াখানায় প্রাণী আনতে বা পাঠাতে হলে কেন্দ্রীয় জু অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদন প্রয়োজন হয়। ফলে সরকারি অনুমতি ছাড়া প্রাণী অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তবে তদন্ত কমিটি শুধু তথ্যের গরমিল চিহ্নিত করেই থেমে থাকেনি। আলিপুর চিড়িয়াখানার আভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায়ও বেশ কিছু ত্রুটি নজরে এসেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তি এড়াতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশও করেছে কমিটি।

বন দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, এই রিপোর্টে স্বস্তি এসেছে দপ্তরের অন্দরে। তবে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত মন্তব্য করতে চাইছে না রাজ্য।