উত্তরপ্রদেশে চার জন যুবক মিলে গণধর্ষণ করেছিলেন ২৮ বছর বয়সি এক যুবতীকে। ওই যুবতী বিচার পাওয়ার আশায় এবং দুষ্কৃতীদের শাস্তির দাবি করে পুলিশের কাছে যান। কিন্তু দেখা যায় রক্ষকই ভক্ষক। পুলিশের হাতে আবার গণধর্ষিতা হতে হয় ওই যুবতীকে। যুবতীর কাছ থেকে তাঁকে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও ওঠে। অভিযোগের উপর ভিত্তি অরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে ওই যুবতী আইজিআরএস (ইন্টিগ্রেটেড গ্রিভান্স রিড্রেসাল সিস্টেম) পোর্টাল থেকে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানিয়েছেন ধর্ষণের বিচার চাইতে তিনি পুলিশের কাছে যান এবং খুরজা এলাকার দু’জন পুলিশকর্মী তাঁকে ২ দিন ধরে আটকে রেখে আবার গণধর্ষণ করেন। এরপরে তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিকরা। বুলন্দশহরের এসএসপি দীনেশ কুমার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, নির্যাতিতা যুবতী পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চার জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে। পুলিশ একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেন। দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত গুরুতর। সঙ্গে সঙ্গেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্যাতিতা অনেকবার নিজের বয়ান বদলেছেন। তিনি ওই দু’জন পুলিশকর্মীর নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতেও রাজি নন। এর ফলে অভ্যন্তরীণ তদন্তের ব্যাপারটি জটিল হয়ে উঠেছে। যদিও এই ঘটনার মিমাংসা যতক্ষণ না হচ্ছে ততক্ষণ ওই দু’জন পুলিশকর্মী বরখাস্তই থাকবেন।‘
ওই যুবতী দাবি করেছেন যে গত বছর নভেম্বর মাসে চার জন যুবক তাঁকে অপহরণ করে আলিগড়ে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে ৪৮ দিন ধরে বন্দী করে রাখা হয় এবং মাদক খাইয়ে বহুবার গণধর্ষণ করা হয়। কোনোরকমে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন যুবতী। তিনি অভিযোগ জানাতে পুলিশের কাছে যান। পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর ওই যুবতীকে নিজের বাড়িতে ডাকেন। সেখানে তাঁকে দু’দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করেন দুই পুলিশকর্মী। অন্য একজন পুলিশকর্মী বিচার পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। ওই যুবতীর স্বামী থানায় গেলে পুলিশ তাঁকেও আটকে রাখে। নির্যাতিতা দাবি করেছেন যে, অভিযুক্তরা যেহেতু রাজনৈতিক দিক থেকে প্রভাবশালী সেই কারণে নিজেদের কর্তব্যপালনে গাফিলতি করছে পুলিশ। পুলিশ যদিও জানিয়েছে যে, মূল গণধর্ষণের মামলায় মাত্র একজনের জড়িয়ে থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি যে তিন জনের কথা যুবতী উল্লেখ করেছেন মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান খতিয়ে দেখার পর জানা গিয়েছে যে, তাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। আসলে কী ঘটেছিল তা স্পষ্টভাবে জানার চেষ্টায় পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।