টানা কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্য। দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ডে লাগাতার বৃষ্টির জেরে জলস্তর দ্রুত বাড়ছে যমুনা, গঙ্গা, সরযূ, চম্বল এবং অন্যান্য নদীগুলির। ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশে যমুনার জল বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বহু নিচু এলাকা জলের তলায়। অন্যদিকে, দিল্লিতেও বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে যমুনা। ফলে আতঙ্কের বাতাবরণ ছড়িয়েছে রাজধানী শহরের একাধিক এলাকায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় হরিয়ানায় ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে হাতিকুণ্ড ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে অতিরিক্ত জল। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দিল্লিতে যমুনার জলস্তরে। দ্রুত গতিতে বাড়ছে নদীর জল। স্থানীয় প্রশাসন ও সেচ দপ্তর জানাচ্ছে, প্রতি ঘণ্টায় জলস্তর কিছুটা করে বাড়ছে, যা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল দিল্লির একাধিক নিচু এলাকা – যমুনা বাজার, রাজঘাট, সিভিল লাইন্স সহ একাধিক অঞ্চল। এবছর এখনও পর্যন্ত সেই স্তরের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, যে কোনও মুহূর্তে জল ঢুকে যেতে পারে লোকালয়ে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, ‘ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে যমুনা। রাতে ঘুম আসে না। সব সময় মনে হয়, এই বুঝি জল ঢুকে পড়ল।’
দিল্লির পাশাপাশি ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলা। প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনা, অযোধ্যায় সরযূ, বান্দা এবং এটাওয়ায় চম্বল – প্রায় সব ক’টি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। প্রশাসনের তরফে বহু এলাকায় জারি হয়েছে সতর্কতা। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ। নিচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সতর্কতা বজায় রাখা হবে। নাগরিকদের উদ্দেশে পরামর্শ – গুজব না ছড়িয়ে, সরকারি তথ্য এবং নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ করুন। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত সুরক্ষিত স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। উত্তর ভারতের এই বৃষ্টিপ্রবণ পরিস্থিতি আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।