ব্যবসার জন্য চিনকে ব্রাত্য করছে বিশ্ব, তা ভারতের পক্ষে শুভ, বললেন নীতিন গড়কড়ি

করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে ঘিরে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য গোটা বিশ্বই চিনকে ব্রাত্য করছে। কেউ আর সে দেশে ব্যবসা করতে চাইছে না। এমন দাবি করার পাশাপাশি এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য শুভ হবে বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি।

শনিবার এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাঙ্কারে কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী বলেন, চিনের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গোটা বিশ্বের অনীহা ভারতের জন্য সুযোগ করে দেবে। ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এই দেশের ছোট শিল্প।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন ওই সাক্ষাৎকারে লকডাউনের পরে কীভাবে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, কীভাবে দেশের ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্প এত বড় ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে তা নিয়ে আলোচনা করেন। সেই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণে বিশ্বের সব দেশেই অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। কিন্তু সব দেশই এখন আর চিনের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চাইছে না। এটা শাপে বর হবে ভারতের। এটা আমাদের কাছে একটা সুযোগ করে দেবে।


সম্প্রতি ভারতের এফডিআই নীতি বদল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিন। ভারতও তার জবাব দিয়েছে। করোনা সঙ্কটের মধ্যেই এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ১.০১ শতাংশ শেয়ার পিপলস ব্যাঙ্ক অব চায়নার কাছে বিক্রি করা হবে বলে স্থির হয়েছে। এর পরেই নীতি বদলের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।

ভারতের পড়শি দেশগুলির জন্য এর আগে দুটি আলাদা এফডিআই ধারা ছিল। পাকিস্তান, বাংলাদেশের জন্যে যে ধারা ছিল তাতে সরকারি অনুমতি ছাড়া বিনিয়োগ সম্ভব ছিল না। দ্বিতীয় ধারায় চিন, নেপাল, মায়ানমার ও ভুটানের জন্য নিয়মে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বিনিয়োগ করা যেত।

কিন্তু নয়া এই এফডিআই সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো এখন থেকে চিন, নেপাল, ভুটানকেও ভারতে বিনিয়োগ করতে হলে সরকারি অনুমোদন নিতেই হবে। আর এখানেই আপত্তি তুলেছে বেজিং।

যদিও ভারত জানিয়ে দিয়েছে, নয়া বিদেশি বিনিয়োগ নীতিতে মোটেও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)’র চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়নি। এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে এদিন নীতিন গড়কড়ির বক্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

গড়কড়ি এদিন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২৪ সালের মধ্যে যে ফাইভ ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি গড়তে চেয়েছেন ভারতে তার জন্য আরও সুযোগ তৈরি হয়ে গেল। অর্থনীতির ক্ষেত্রে এশিয়ার জায়েট চিনের অবস্থা যে সঙ্কটজনক তা অনেকেই বলেছে।

আগেই ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ) জানিয়েছে করোনা মহামারীর জন্য চিনের গ্রোথ রেট ১.২ শতাংশ হয়ে যাবে চলতি বছরে। অর্থনৈতিক ধাক্কার পাশাপাশি আমেরিকা-সহ অনেক দেশই করোনা সংক্রমণ এমন বিশ্বজোড়া মহামারীর আকার নেওয়ার জন্য চিনকেই দায়ি করছে। সব মিলিয়ে বেশ চাপেই রয়েছে চিন।

উল্লেখ্য আমেরিকা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অনেক দেশের বহু শিল্প সংস্থাই চিনের উপরে নির্ভরশীলতা কমানোর কথা বলেছে। এমনকি অনেক সংস্থাই চিন থেকে ভারতে কারখানা সরিয়ে আনার কথা বলেছে বলেও শোনা গিয়েছে। সেই সম্ভাবনাকেই এদিন নতুন মাত্রা দিল গড়কড়ির মন্তব্য।