সরকারি হাসপাতালের ভিতরে এক তরুণীকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা এক যুবকের। ঘটনাটি গত ২৭ জুন মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুর জেলা হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার বিভাগে ঘটেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় সকলের সামনে থেকে চম্পট দেন দুষ্কৃতী। তবে এক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। হাসপাতালের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষী, চিকিৎসক, রোগীদের মাঝে কীভাবে ওই যুবক এসে এমন কাণ্ড ঘটালেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সোমবার ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে।
মৃতার নাম সন্ধ্যা চৌধরি। তিনি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পুলিশ সূত্রে খবর, সন্ধ্যাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিষেক কোষ্টি নামের এক যুবক। কিন্তু সন্ধ্যা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর থেকে তাঁকে বারবার উত্যক্ত করতেন অভিষেক। গত ২৭ তারিখ এক বন্ধুর আত্মীয়কে দেখতে নরসিংহপুর জেলা হাসপাতালে গিয়েছিলেন সন্ধ্যা। সেই খবর পেয়ে অভিষেক হাসপাতাল চত্বরে এসে হাজির হন। হাসপাতাল চত্বরেই দুই জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সন্ধ্যা ভিতরে ঢুকে বন্ধুর আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিষেকও পিছন পিছন হাসপাতালে প্রবেশ করেন। হাসপাতালে ঢুকেই সন্ধ্যাকে মারধর শুরু করেন অভিষেক। তাঁকে চড় মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। এরপর একটি ছুরি বার করে সন্ধ্যার বুকের উপর চেপে তাঁর গলায় চালিয়ে দেন। সেই সময় ট্রমা কেয়ারের বাইরেই দাঁড়িয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষী। ট্রমা কেয়ারের ভিতরে ছিলেন চিকিৎসক ও নার্সরাও। কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় কেউ এগিয়ে আসার সাহস পাননি। এক নার্স তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতে গেলে তাঁকেও খুনের হুমকি দেন অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যাকে খুনের পর অভিষেক নিজের গলাতেও ছুরি চালানের চেষ্টা করেন। কিন্তু আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপরই হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে বাইকে চেপে চম্পট দেন তিনি। সেই সময় তাঁকে কেউই বাধা দেয়নি। পরিবারের সদস্যরা আসার পর তরুণীর রক্তাক্ত দেহ সরানো হয় বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে হাসপাতালে ও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। নরসিংহপুরের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই মধ্যপ্রদেশে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রোগীরা।