দুর্ঘটনার মুহূর্তে এটিসি-কে ঠিক কী বার্তা দিয়েছিলেন পাইলট?

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী কী বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন পাইলট সুমিত সভরওয়াল? ঘটনার দুই দিন পর বিষয়টি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, পাইলট টেক অফ করার পরই বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ে এটিসিকে বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি চরম বিপদ সঙ্কেত হিসেবে এটিসিকে তিনবার ‘মে ডে…মে ডে…মে ডে…’ কল করেন। তিনবার ‘মে ডে’ বলার পাইলট বলেন, ‘নো পাওয়ার…নো থ্রাস্ট…গোয়িং ডাউন…’। অর্থাৎ ‘কোনও পাওয়ার নেই, কোনও শক্তি পাচ্ছি না, বিমান নিচে নেমে যাচ্ছে’। এটিসিকে মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের এই বার্তা দেওয়ার পর পাইলটের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি।

জানা গিয়েছে, থ্রাস্ট হল একটি শক্তি। যা বিমানকে হাওয়ায় ভাসতে সাহায্য করে। বিমানের ইঞ্জিন থেকেই এই শক্তি সৃষ্টি হয়। বাইরের তাপমাত্রা বেশি থাকার জন্য অনেক সময় থ্রাস্ট কমে যায়। এই জন্য উড়ানের সময় সঠিক থ্রাস্ট নির্ধারণ করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। যদি পাইলট ভুলক্রমে কম ‘থ্রাস্ট’ নির্ধারণ করেন বা এই থ্রাস্ট নির্ধারণে তাঁর যদি হিসাবের গন্ডগোল হয়, তা হলে বিমান উপরের দিকে উঠতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিমানটি রানওয়ে ছাড়ার মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই অর্থাৎ ১টা ৩৯মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিটের মাঝেই এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ হয় পাইলটের এবং বিপদবার্তা পাঠায়। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর তার পরই আহমেদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ অভিশপ্ত বিমানটি। এই তথ্য দিয়েছে দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ)।


তবে এর বেশি কিছু তথ্য জানা যায়নি। বাকিটা ব্ল্যাকবক্স রেকর্ড বিশ্লেষণ করে জানা যাবে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যে একটি ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার হলেও দ্বিতীয়টির খোঁজে তল্লাশি চলছে। দুর্ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। তদন্তে যুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি সংস্থাও।

উল্লেখ্য, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ে মেঘানিনগরের বি জে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের উপর। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিমানযাত্রী, ক্রু সদস্য, পাইলট, হস্টেলের পড়ুয়া-সহ মোট ২৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার এই বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল? কোথায় ত্রুটি ছিল? যান্ত্রিক ত্রুটি, নাকি মানবিক? এখন এই সব প্রশ্ন নিয়ে কাটাছেঁড়া ও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। যদিও অনেকেই মনে করছেন, এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।