‘আধার এটিএম’ কী? জানুন এর ব্যবহার

অনেক সময় টাকার প্রয়োজন পড়লেও আমাদের কাছে ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড কিংবা নগদ অর্থ থাকে না। এহেন পরিস্থিতিতে আপনার আধার কার্ড নিজেই আপনার এটিএম হয়ে উঠতে পারে। এই ব্যবস্থার নাম এইপিএস বা আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম।

এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, ‘আধার এটিএম’ কোনও আলাদা মেশিন নয়, এটি একটি পেমেন্ট পরিষেবা। এর অফিসিয়াল নাম হল আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম (এইপিএস)। এটি তৈরি করেছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল – প্রতিটি নাগরিকের জন্য ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সহজলভ্য করা।

এই ব্যবস্থায় টাকা তোলার জন্য আপনার ডেবিট কার্ড বা এটিএম পিনের প্রয়োজন নেই। আপনার আধার নম্বর এবং আঙুলের ছাপ হল আপনার পরিচয় এবং পাসওয়ার্ড। এই পরিষেবাটি সাধারণত ব্যাঙ্কিং করেসপন্ডেন্ট বা ‘ব্যাংক বন্ধু’-র মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাঁরা একটি ছোট পয়েন্ট-অফ-সেল (পিওএস) বা মাইক্রো-এটিএম মেশিন ব্যবহার করে। এই মেশিনটি আপনার আধারের মাধ্যমে সরাসরি আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। গোটা প্রক্রিয়াটি আপনাকে টাকা লেনদেন করতে দেয়।


আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি প্রক্রিয়া। এই ব্যবস্থায় নিরাপত্তার সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হল এর বায়োমেট্রিক সনাক্তকরণ। আপনি যখন কোনও লেনদেন করেন, তখন আপনি মেশিনে আঙুলের ছাপ বা চোখের মণি স্ক্যান প্রদান করেন। আর সবচেয়ে বড় কথা, এগুলি কোনওভাবেই নকল করা যাবে না। অর্থাৎ, আপনার শারীরিক উপস্থিতি এবং বায়োমেট্রিক যাচাইকরণ ছাড়া, কেউ আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবে না।

আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম (এইপিএস) এটিএম-এর চেয়েও বেশি নিরাপদ, কারণ পিন অনুমান করা বা চুরি করা যেতে পারে। কিন্তু আপনার আঙুলের ছাপ নকল করা যাবে না। এই ব্যবস্থার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল – ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর অপারেটরের সঙ্গে শেয়ার করার প্রয়োজন নেই। এটি আপনার ব্যাঙ্কিং তথ্য সম্পূর্ণ গোপন এবং সুরক্ষিত রাখে।

আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম (এইপিএস) এর মাধ্যমে নগদ টাকা তোলার বিষয়টি ছাড়াও ব্যালেন্স চেক, মানি ট্রান্সফার, মিনি স্টেটমেন্ট নেওয়া যেতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যটি গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, যেখানে ব্যাঙ্কের শাখা বা এটিএম মেশিনের অভাব রয়েছে।