ইভিএমে ভোট গণনার পরই ভিভিপ্যাট গণনা করা হবে : নির্বাচন কমিশন

গুয়াহাটির এক ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরের চিত্র (Photo: IANS)

ভােটগণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন নয়, বিরােধীদের দাবি খারিজ করে দিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, কমিশন নিজস্ব অবস্থানে স্থির, ইভিএম ভােট গণনার পরই ভিভিপ্যাট গণনা করা হবে। শুধু তাই নয়, কমিশন ইভিএম গণনার পাশাপাশি পােস্টাল ব্যালটও গণনা করবে।

দেশে মােট ১৮ লক্ষ সার্ভিস ভােটার রয়েছে, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ভােটার ব্যালট পেপার জমা দিয়েছেন। এতদিন পর্যন্ত পােস্টাল ব্যালট আগে গণনা করা হত, তারপরই ইভিএম গণনা শুরু হত। এবার ইভিএম গণনার সঙ্গেই ব্যালট পেপার গণনা করা হবে। কমিশন বলেছে, ইভিএম গণনার পর প্রতি লােকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত বিধানসভা পিছু পাঁচটা করে বুথের ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনা করা বাধ্যতামূলক।

বিরােধী দলগুলাে নির্বাচন কমিশনকে আবেদন করেছিল, যদি কোনও সমস্যা হয়, তার আগে গণনার দিন শুরুতে লাগাতার পাঁচটা করে ভিভিপ্যাট গণনা করা হােক। নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, পুরােনাে প্রােটোকল মেনেই ভােট গণনা হবে। ভিভিপ্যাট স্লিপ পরে গণনা করা হবে। তবে কেন পুরােনাে প্রােটোকল মেনে ভােট গণনা করা হবে তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।


ভােট গণনার প্রথম পর্বে পােস্টাল ব্যালট প্রথমে গণনা করা হয়। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, দূতাবাস কর্মী, সেনা বাহিনী, কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী, রাজ্য পুলিশদের সার্ভিস ভোটার হিসেবে গণ্য করা হয়। ভোটার হিসেবে গণ্য করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬.৪৯ লাখ ভােটার ব্যালট পেপারে তাঁদের ভােটাধিকার প্ৰয়ােগ করে নির্দিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের হাতে ১৭ মে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কমিশনের তরফে জানানাে হয়েছে, ‘কয়েক ঘন্টার মধ্যে ব্যালট পেপার গণনা হয়ে যায়। তবে কোনও তাড়াহুড়াে করতে চাই না। ব্যালট পেপার সংখ্যার হিসেবে ধীরগতিতেও গণনা করতে চাই না। ইভিএম গণনার সঙ্গেই ব্যালট পেপার গণনা করা হবে’।

ইভিএম কারচুপি নিয়ে বিরােধীরা সােচ্চার, তাদের অভিযােগ ইভিএমে কারচুপি করে জনগণের রায় পাল্টে ফেলার চক্রান্ত করেছে বিজেপি। কিন্তু সত্যিই কি কারচুপি করা সম্ভব দেশবাসীর আশঙ্কা দূর করে দিল্লির মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, কোনওমতেই ইভিএম কারচুপি সম্ভব নয়। ভােটগ্রহণ যন্ত্রে পুরােপুরি নিরাপদ ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। ইলেকট্রনিক ভােটিং মেশিন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে কারচুপি করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘কোনও পরিস্থিতিতে ইভিএম কারচুপি সম্ভব নয়। হ্যাক করা যায় না। ইন্টারনেট, ওয়াইফাই, ব্লুটুথের সঙ্গে কোনও সংযােগ নেই, তাহলে কিভাবে মেশিনে কারচুপি হবে’।

নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, ইলেকট্রনিক কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ইভিএমগুলাে তৈরি করে। ভােটিং মেশিন তৈরির সময়ে কঠোরতম নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়। ফলে প্রােগ্রামিং বদলানাের চেষ্টা করলে তা ধরা পড়ে যাবে। মেশিন কেঁপে উঠে বন্ধ হয়ে যাবে। দ্বিতীয়বার তা ব্যবহার করা যাবে না, কারণ মেশিনগুলােতে ওয়ান টাইম প্রােগ্রামিং চিপ ভরা থাকে।

বিরােধীদের অভিযােগ খারিজ করে দিয়ে কমিশনেক আধিকারিকরা জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভােটিং মেশিন রাজ্যে পৌছনাের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে ইভিএম বদলে ফেলার যুক্তিও চলে না। ভােট গ্রহণের পর রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সামনে ইভিএম সিল করা হয়। সিল খােলার সময়েও একই নিয়মে করা হয়। মকপােলের সময়ও একই পদ্ধতিতে করা হয়। নির্বাচনী আধিকারিকরা জানতে পারেন না কোন মেশিন কোন বুথে যাচ্ছে, ফলে ইভিএম কারচুপির অভিযােগের কোনও যুক্তি নেই।