যুদ্ধের দামামা বাজিয়েছেন অমিত শাহ, শেষ দেখে ছাড়ব, হুঁশিয়ারি বিজয়নের

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। (File Photo: IANS)

 

শনিবার হিন্দি দিবসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইট এবং বক্তৃতা নিয়ে যে পারদ চড়েছিল দক্ষিণী রাজনীতিতে, রবিবার তা আরও বাড়লাে। এদিন হিন্দি নিয়ে অমিত শাহের বিরুদ্ধে তােপ দাগলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেন, অমিত শাহের মন্তব্য নতুন যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে। এর ফল ভালাে হবে না। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।

সিপিআই (এম) পলিটব্যুরাে সদস্য পিনারাই বিজয়ন ফেসবুকে লিখেছেন, হিন্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতীয়র মাতৃভাষা নয়। তাদের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দিলে তা হবে দাসত্বের সামিল। যাদের মাতৃভাষা হিন্দি নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন।


এদিনও বিজেপি সভাপতিকে নিশানা করেন ডিএমকে’র এম কে স্ট্যালিন। স্ট্যালিন এদিন বলেন, আন্না (প্রয়াত ডিএমকে সর্বাধিনায়ক করুণানিধি) বলতেন, বেশির ভাগ মানুষ যে ভাষায় কথা বলেন, তা যদি রাষ্ট্রভাষা করতে হয় তাহলে ময়ূরের বদলে কাককে জাতীয় পাখি হিসেবে ঘােষণা করতে হয়।

গতকাল অমিত শাহ বলেছিলেন, সারা দেশে একটা ভাষা হওয়া খুব জরুরি। সারা বিশ্বের ভারতের পরিচিতিকে তলে ধরতে এই মুহুর্তে তা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এও বলেন, ভারত বহু ভাষাভাষীর দেশ। প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। তবে তারই মধ্যে হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসেবে ঘােষণা করার প্রস্তাব রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

হিন্দি দিবসে টুইট করে অমিত শাহ লেখেন, প্রতি বছর ১৪ সেপ্টেম্বর দিনটি হিন্দি ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। যখন ভারতের গণপরিষদ হিন্দিকে ভারতের সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছিল সেই দিনের তাৎপর্যকে চিহ্নিত করেই এই দিনটি পালন করা হবে। দেবনাগরী লিপিতে রচিত হিন্দি, দেশের ২২টি তফশীলি ভষার একটি। তবে হিন্দি হল কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি সরকারি ভাষার একটি। তাঁঁর কথায়, বর্তমানে যদি এমন একটি ভাষা থাকে, যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে, তা হল হিন্দি ভাষা। এটি ভারতের সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সহজবােধ্য ভাষা।

দক্ষিণী রাজনীতি বরাবরই ভাষার প্রশ্নে রক্ষণশীল। করুণানিধি নিজেও এক সময় দ্রাবিড় আন্দোলনের পুরােধা ছিলেন। গতকাল থেকেই ফুসছে দক্ষিণের রাজ্যগুলি। রাস্তায় নেমেছে একাধিক কন্নড় সংগঠন। একাধিক স্টেশনে হিন্দি নামের ওপর দেয়া হয়েছে আলকাতরার পােচ। রবিবার ছুটির দিনও ভাষা নিয়ে সরগরম সেখানকার রাজনীতি।

বিজেপি’র এক মুখপাত্র বলেছেন, অমিত শাহ দেশের ঐক্যের প্রশ্নে হিন্দিকে সর্বজনীন করার কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, অফিসে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মাতৃভাষায় কথা বলুন। কারণ সব ভাষারই গুরুত্ব রয়েছে। যারা এই সব বলছেন, তারা আসলে বিজেপি’র বিরােধিতা করতে গিয়ে ‘হয়’ কে ‘নয়’ করছেন।