প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন উত্তরাখণ্ড, ধস নেমে ভেঙেছে বাড়িঘর মৃত ১৬, নিখোঁজ বহু

প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন উত্তরাখণ্ড (Photo: SNS)

ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের একাধিক জেলা। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে রাজ্যের একাধিক নদী। ফলে বনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত দু’দিনে উত্তরাখণ্ডের একাধিক জায়গায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। নিখোঁজ অনেকে।

জলভাসি একাধিক এলাকা। ভেঙে গেছে বাড়িঘর, দোকানপাট। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে রাজ্য পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল। উত্তরাখণ্ডে মৃতদের পরিবারে প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বঙ্গোপসাগরে নতুন করে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে।

এই ঘূর্ণাবর্তই গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। দেশের একাধিক রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। মধ্যপ্রদেশের ওপর রয়েছে নিম্নচাপ, যা ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে সরে এসে উত্তরপ্রদেশের দিকে যাচ্ছে।


পাশাপাশি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সঙ্গে পূবালী হাওয়ার সঙ্ঘাতে বড় দুর্যোগ ঘনিয়েছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, চণ্ডীগড় সহ উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে আগামী কয়েকদিন তুমুল ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে মৌসম ভবন।

রাস্তাঘাট রেললাইনে জল জমেছে। পাহাড়ি এলাকায় ধস নেমে জনজীবন বিপর্যস্ত। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গড়িয়ে আসা জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে অনেক বাড়িঘর। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রামগড়ের টাল্লা এলাকা। গোটা এলাকাটাই বানভাসী।

অন্যদিকে চামোলি জেলাও জলমগ্ন বন্ধ হয়ে গিয়েছে বদ্রীনাথহাইওয়ে। সোমবার খুব পৌরী জেলার পাহাড়ি এলাকায় ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে কয়েকজন শ্রমিকের স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, টানা বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে গিয়ে ধস নামে এলাকায়। ভেঙেচুরে যায় শ্রমিকদের তাবু।

ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। প্রশাসন সূত্রে খবর দুদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডের পাড়ুই, দেরাদুন, পিথোরাগড় সহ বিভিন্ন এলাকা বানভাসী হয়েছে। ঋষিকেষে রামঝুলায় বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে বইছে গঙ্গা।

দেরাদুন ও ঋষিকেষের বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। চন্দ্রভাগা ব্রিজ, তপোবন লক্ষ্মণঝুলা প্রায় যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। নৈনিতাল লেকের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে থাকায় উদ্ধারকাজব্যাহত হচ্ছে।

তবে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও ধসের জেরে চারধাম যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পৌরি জেলা পুরোপুরি জলমগ্ন। সড়কপথগুলি অবরুদ্ধ হয়ে আছে।

বৃষ্টিতে যেভাবে চারধাম যাওয়ার রাস্তাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাতে পর্যটনে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন স্থানীয় মানুষরা। স্থানীয় প্রশাসনের অবশ্য চিন্তা অন্য। ধ্বংসস্তূপের নিচে যাঁরা জীবিত চাপা পড়ে রয়েছেন তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করা।

তবে এমন বৃষ্টি যদি আরও চব্বিশ ঘণ্টা চলতে থাকে, তাহলে দ্ধারকার্যই বা কতটুকু করা যাবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। বন্যায় আটকে পড়েছেন পর্যটকরাও।