সোমবার লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ধর্মেন্দ্রকে বিরোধী দলের এক সাংসদ বলেন, ‘‘গত সাত বছরে ৭০ বার সরকারি পরীক্ষায় এরকম প্রশ্নপত্র ফাঁস-সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। মন্ত্রী কি বলতে পারবেন, এই অনিয়ম রুখতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে?’’ জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এনটিএ গঠনের পরে দেশে ২৪০টি পরীক্ষা হয়েছে। সাত বছরে কোনও রকম প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ নেই। যে ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটেছে, সেটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিহারের পাটনার কাছের একটি এলাকায় একটিমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে হয়েছে, এবং বিহার পুলিশের সক্রিয়তার কারণে ধরা পড়েছে। সিবিআইও তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে আছে। সমস্ত তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে।’’ এর পরেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ঘটনাটির ‘গুরুত্ব’ বিচার করে তিনি কি ইস্তফা দেবেন? জবাবে ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি এখানে এসেছি আমার নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছায়। তাই দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্ন যখন আসবে, আমার সরকার একজোট হয়ে তার উত্তর দিতে বাধ্য।’’
ধর্মেন্দ্রের এই জবাবেরই সমালোচনা করেন রাহুল। এ-ও বলেন, ‘‘দেশের কোটি কোটি মানুষ জানেন, পয়সা থাকলে ভারতের পরীক্ষার ব্যবস্থাটাকেই কিনে নেওয়া যায়। বিরোধীরাও তা-ই মনে করে।’’ বিরোধীরা এই মন্তব্যে লোকসভায় ‘শেম শেম’ বলে চিৎকার শুরু করেন। পরে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, ‘‘এই সরকার প্রশ্নপত্র ফাঁসের রেকর্ড করবে।’’ বিরোধীদের চিৎকারে ক্ষুব্ধ ধর্মেন্দ্রকে বলতে শোনা যায়, ‘‘চিৎকার করলেই অসত্য সত্য হয়ে যাবে না। বিরোধী দলনেতা যেভাবে দেশের পরীক্ষা ব্যবস্থার নিন্দা করছেন, তা নিন্দনীয়।’’
অখিলেশ বলেন, নিট কেলেঙ্কারি যা জানা গিয়েছে তাতে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ না করলে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অবিচার করা হয়। তিনি অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। জবাবে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, উত্তরপ্রদেশে আপনারা ক্ষমতায় থাকার সময় কতবার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, সেই হিসাবটা বলুন। অখিলেশের সমর্থনে উঠে দাঁড়ান কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ বি মনিকম টেগর। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতেই হবে। বিরোধীদের দাবি, পাল্টা জবাব নিয়ে সংসদ সরগরম হয়ে ওঠে। শাসক ও বিরোধী পক্ষ একে অপরকে অতীতের নানা ঘটনা তুলে ধরে আক্রমণ করতে থাকেন ।
নিটকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছিল এলাকা ভিত্তিক ফল প্রকাশ করতে। সেই নির্দেশ মেনে ফল প্রকাশ করা হয়। তবে নতুন যে ফল প্রকাশ হয় তা নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এনটিএ যে ফল প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে, রাজস্থানের সিকরের ৫০টির মধ্যে ৩৭টি সেন্টারের পরীক্ষার্থীরাই শীর্ষ নম্বর প্রাপ্তির তালিকায় রয়েছে। এই ইস্যুতেও নতুন করে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।