প্যাকেজ লেনদেনে শুল্কছাড় তুলে নিল আমেরিকা। এত দিন পর্যন্ত আমেরিকায় ৮০০ ডলার (প্রায় ৭০ হাজার টাকা) পর্যন্ত মূল্যের প্যাকেজ পাঠালে কোনও শুল্ক দিতে হত না। কিন্তু সেই সুবিধা এবার তুলে নিল আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। ফলে ভারতের মতো যেসব দেশে আমেরিকা ২৫ শতাংশ বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করেছে, সেসব দেশের প্যাকেজ পাঠানোর ক্ষেত্রেও আর মিলবে না ছাড়। তবে আগামী ছ’মাসের জন্য পার্সেল প্রেরকদের অন্য একটি বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগও দিয়েছে ওয়াশিংটন।
আমেরিকার কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এজেন্সি-এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এখন থেকে যেকোনও মূল্যের পার্সেলের উপর সংশ্লিষ্ট দেশের রপ্তনি শুল্কের হারেই শুল্ক ধার্য করা হবে। ফলে ভারত, চিন, ব্রাজিল, কানাডার মতো দেশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২০০ ডলার পর্যন্ত খরচ পড়তে পারে প্রতি পার্সেলে।
আপাতত ছ’মাসের জন্য কিছুটা ছাড়ের বিকল্প রাখা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে প্যাকেজ প্রেরকেরা বাড়তি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে আমেরিকায় পার্সেল পাঠাতে পারবেন। শুল্কহার অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত অর্থ ৮০ ডলার থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যাদের উপর শুল্ক ১৬ শতাংশ বা তার কম, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি ৮০ ডলার দিলেই চলবে। ১৬-২৫ শতাংশ শুল্কের ক্ষেত্রে দিতে হবে ১৬০ ডলার। ২৫ শতাংশ বা তার বেশি শুল্কের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ ডলার দিতে হবে।
আমেরিকার বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো এই সিদ্ধান্তকে ‘স্থায়ী পরিবর্তন’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, এত দিন এই শুল্কছাড়ের সুযোগ নিয়ে বহু দেশ রপ্তানি শুল্ক এড়িয়ে আমেরিকায় পণ্য পাঠাত। এমনকি নিষিদ্ধ মাদক এবং বিপজ্জনক সামগ্রীও ঢুকত পার্সেলের মাধ্যমে। নতুন এই ব্যবস্থায় সেই সব বেআইনি কার্যকলাপ রুখে দেওয়া যাবে বলেই প্রশাসনের আশা। পাশাপাশি, বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার (এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকদের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁরা সরাসরি গ্রাহকের কাছে পণ্য পাঠিয়ে থাকেন, তাঁদের জন্য খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। এর ফলে পণ্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। আমেরিকার এমন পদক্ষেপ আরও দেশকে পাল্টা শুল্ক আরোপে উৎসাহিত করতে পারে বলেই ধারণা।