ফের এক বুথ স্তরের কর্মী বা বিএলও-র আত্মহত্যার চেষ্টায় প্রবল আলোড়ন উত্তরপ্রদেশে। মীরাটের ক্যান্টনমেন্ট বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের দায়িত্বে থাকা ২৫ বছর বয়সি বুথ লেভেল অফিসার মোহিত চৌধুরী মঙ্গলবার রাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে গড় রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সঙ্কটজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
মোহিতের পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা অভিযোগ তুলেছেন, এনিউমারেশন ফর্ম জমা দিতে দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে সুপারভাইজার নিয়মিত হেনস্থা করছিলেন তাঁকে। পরিবারের দাবি, ‘নিয়ম না মানলে বরখাস্তের হুমকি’ শুনতে শুনতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মোহিত। আত্মীয়দের কথায়, বিষ খাওয়ার মাত্র আধঘণ্টা আগেও তিনি তাঁর খুড়তুতো ভাইকে ফোন করে সুপারভাইজারের ক্রমাগত চাপে থাকার কথা জানিয়েছেন।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়ায়। জানা গিয়েছে, সেচ দপ্তরের কেরানি মোহিত। এই ঘটনার পর তাঁর সহকর্মীরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিএলও-দের উপর অযথা ভয় দেখানো হচ্ছে। সামান্য ভুলকেও অপরাধ বলে দেখানো হচ্ছে।’ বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিএলও-রা নিয়মিত অযৌক্তিক চাপের মুখে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ তাঁদের নিরাপত্তা বা মানসিক চাপের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
উপ-জেলা নির্বাচন আধিকারিক সত্যপ্রকাশ সিং জানিয়েছেন, এনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার সময়সীমা ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘মোহিত যে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন, প্রশাসন তা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু হয়েছে।’ এই ঘটনার জেরে উত্তরপ্রদেশে বিএলও-দের কাজের পরিবেশ, নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অন্তত পাঁচ জন বিএলও-র মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে, যা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।