২০২৭ সালে দেশজুড়ে শুরু হতে চলা জনগণনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এই জনগণনার কাজ সম্পন্ন করার জন্য মোট ১১,৭১৮ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে কেন্দ্র। এই বিপুল অঙ্কের টাকা মূলত দেশের প্রতিটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ, গণনার পরিকাঠামো শক্তিশালী করা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের খরচ মেটাতে ব্যয় করা হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৭ সালের জনগণনা হবে দুই দফায়। প্রথম দফায় গৃহ তালিকা প্রস্তুতি আর দ্বিতীয় দফায় মূল জনগণনা করা হবে। এই দুই পর্যায়ে দেশের প্রতিটি অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্র চাইছে আরও নির্ভুল ও সর্বাঙ্গীন তথ্য সংগ্রহ করতে। নীতিনির্ধারণ থেকে শুরু করে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পরিকল্পনা— সব ক্ষেত্রেই জনগণনার তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেই সরকারি মহলের বক্তব্য।
জনগণনা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেনসাস কমিশনার দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি এই গণনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। স্মার্ট ডিভাইস, কেন্দ্রীয় সার্ভার, উন্নত সফটওয়্যার এবং নিরাপদ তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও এই বড় অঙ্কের বাজেট ব্যয় করা হবে।
প্রসঙ্গত, জনগণনা সাধারণ মানুষের জীবনে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি থেকে শুরু করে স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রাস্তা, জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ সংযোগ— সব ক্ষেত্রেই নির্ভুল তথ্য অত্যন্ত জরুরি। সেই কারণে ২০২৭ সালের জনগণনা আরও নিখুঁত করতে চায় কেন্দ্র।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জনগণনার আগে কর্মীদের বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে গণনাকারীরা তথ্য সংগ্রহের সব খুঁটিনাটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পান। পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে জনগণনা প্রক্রিয়ায় উৎসাহিত করতে বিশেষ প্রচারও চালানো হবে।
উল্লেখ্য, দেশের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে। এরপর কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালের জনগণনা স্থগিত হয়ে যায়। ফলে ২০২৭ সালের গণনাই হতে চলেছে দেশের পরবর্তী বৃহত্তম জনসংখ্যা-তথ্য সংগ্রহ অভিযান। এই বরাদ্দ অনুমোদনের ফলে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জনগণনার প্রস্তুতি শুরু করে দিল।