শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ মনিপুরের দুই নির্যাতিতা    

দিল্লি, ৩১ জুলাই – কেন্দ্র ও মণিপুর সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন মণিপুরের দুই নির্যাতিতা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় যাঁদের প্রকাশ্যে নগ্ন করে হাঁটানো হয় , তাঁদের সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন, এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। সুপ্রিম কোর্টকে এই  বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত উদ্যোগ নেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা ।একইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের কাছে তাঁদের অনুরোধ, তাঁদের পরিচয় যেন গোপন রাখা হয়। সোমবারই এই মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে।

মনিপুরের ঘটনায় আরও চাপ বাড়ল মোদি সরকারের।  মনিপুরের ভাইরাল হওয়া ভিডিওর দুই নির্যাতিতা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁরা আবেদনে ভিজেদের পরিচয় যাতে গোপন থাকে সেই আর্জি জানিয়েছেন। তাঁদের গোপন জবানবন্দি যেন তাঁদের বাড়ির কাছাকাছি কোনও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নেওয়া হয় সেই আবেদনও জানান।

গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, এই মামলার তদন্ত সিবিআই-কে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সরকারিভাবে এই ঘটনার বিষয়ে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ওই ভাইরাল ভিডিয়োতে ফাঁস হওয়া ঘটনার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারকে তা আদালতে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনাটিকে ‘সাংবিধানিক অধিকার এবং মানবিকতার লঙ্ঘন’ বলেছিল শীর্ষ আদালত।


এদিকে, এই মামলার শুনানি মণিপুরের বদলে অন্য রাজ্যে সরাতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার সেই আবেদনেরও শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় কুমার ভাল্লা একটি হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিলেন, এই মামলার কাজ সময়মতো শেষ করতে, এর বিচারটি মণিপুরের বাইরে কোনও জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টকে এই মামলার বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করেছে কেন্দ্র। মণিপুরের হিংসা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল ২৮ জুলাই। তবে, ওইদিন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় অসুস্থ হয়ে পড়ায়, সেই আবেদনগুলির শুনানি স্থগিত রাখা হয়েছিল।

বিভীষিকাময় এই ঘটনা ঘটেছিল ৪ মে, অর্থাৎ, মণিপুরে হিংসা শুরুর একদিন পরই। তবে, ১৯ জুলাই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়। ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই এই ন্যক্কারজনক ঘটনার কথা জানাজানি হয়। দেশজুড়ে শুরু নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।শীর্ষ আদালতের তিরস্কারের মুখে পরে কেন্দ্র ও রাজ্য। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, রাজ্য ও কেন্দ্র অবিলম্বে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না করলে মনিপুরের ঘটনায় ব্যবস্থা নেবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সরকারের পদক্ষেপ করার সময় এসেছে। এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। যদি সরকার কোনও পদক্ষেপ না করে, আমরা করব।