ছত্তিশগড়ে ফের খতম মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির দুই শীর্ষ নেতা। যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত কাট্টা রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে রাজু দাদা এবং কাদারি সত্যনারায়ন রেড্ডি ওরফে কোসা দাদা।দু’জনের মাথার দাম ছিল ৪০ লক্ষ টাকা করে মোট ৮০ লক্ষ টাকা। ছত্তিশগড়ের অবুঝমাঢ়ের জঙ্গলে তাদের নিকেষ করে পুলিশের যৌথবাহিনী। মে মাসে অবুঝমাঢ়ের জঙ্গলেই পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছিলেন শীর্ষ মাওবাদী নেতা নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। এবার ওই এলাকাতেই নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে মাওবাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্যের।
ছত্তিশগড়ের অবুঝমাঢ়ে মাওবাদী থাকার গোপন খবর পান গোয়েন্দারা। সেইমতো অভিযানে নামে ছত্তিশগড় পুলিশের ডিআরজি ফোর্স এবং আইটিবিপি। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে চলে তল্লাশি অভিযান। পিছু হটতে না পেরে মরিয়া হয়ে গুলি চালাতে শুরু করে মাওবাদীরা। পাল্টা গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। দীর্ঘক্ষণ দু’পক্ষের গুলির লড়াই চলার পর মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই প্রধান রাজু দাদা ও কোসা দাদার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি একে-৪৭, একটি আইএনএসএএস রাইফেল, একটি বিজিএল লঞ্চার এবং প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক ও মাওবাদী নথিপত্র, ক্যাম্পিং করার সরঞ্জাম এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। দুই মাওবাদী নেতা তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। বয়স হয়েছিল যথাক্রমে ৬৩ ও ৬৭ বছর। কয়েক দশক ধরে দেশে একাধিক মাও অভিযানের মাস্টারমাইন্ড ছিল এই দুই শীর্ষ নেতা।
এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, সোমবার ছত্তিশগড়ে এবং মহারাষ্ট্রের সীমানা লাগোয়া নারায়ণপুর জেলার অবুঝমাঢ় জঙ্গলে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ বাধে। তাতে মৃত্যু হয়েছে রাজু দাদা ওরফে কাট্টা রামচন্দ্র রেড্ডি এবং কোসা দাদা ওরফে কাদারি সত্যনারায়ণ রেড্ডি-র। তারা দু’জনেই সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এক্স হ্যান্ডলে নিরাপত্তাবাহিনীর প্রশংসা করেছেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাইও। এই সংঘর্ষকে ‘নকশালপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি নির্ণায়ক সাফল্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদী মুক্ত ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা আরও গতি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে ২৮৭ জন মাওবাদী নেতা। গ্রেপ্তার হয়েছে হাজারেরও বেশি। পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করেছে ৮৩৭ জন। চব্বিশের পর পঁচিশ সালে অভিযানের ঝাঁজ আরও বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৯ মাসে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে ২১০ জন মাওবাদীর। এদের মধ্যে শুধুমাত্র ছত্তিশগড়েই ১৩ জন শীর্ষ মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে। যাদের মাথার ন্যূনতম দাম ২০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা।