পাটনার এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চন্দন মিশ্র খুনের ঘটনায় আরও তিন দুষ্কৃতীর হদিশ পেল বিহার পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে আরায় অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হয় বলবন্ত কুমার সিংহ ও রবিরঞ্জন কুমার সিংহ নামে দুই দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় আরও এক অভিযুক্ত, অভিষেক কুমারকে। তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ১৭ জুলাই পাটনার একটি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ঢুকে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়ে হত্যা করে চন্দন মিশ্রকে। তিনি নিজেও একাধিক খুন ও অপরাধে অভিযুক্ত এবং প্যারোলে মুক্ত হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পুলিশের অনুমান, চন্দনের পুরনো গ্যাং সম্পর্কিত দ্বন্দ্বের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড।
ঘটনার পর থেকে বিহার পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স এবং ভোজপুর জেলা পুলিশ চন্দনের হত্যাকারীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল। সেই সূত্রে সোমবার গভীর রাতে আরা শহরের এক এলাকায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। অভিযান চলাকালীন দুষ্কৃতীরা গুলি ছুড়লে পাল্টা জবাব দেয় পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হয় বলবন্ত ও রবিরঞ্জন। দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে কড়া পুলিশি নজরদারিতে চলছে তাঁদের চিকিৎসা।
সংঘর্ষস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, পাটনা হত্যাকাণ্ডে ইতিমধ্যেই কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চন্দনের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের মূল অভিযুক্ত তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশা সহ চার জনকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে তৌসিফের তুতো ভাই নিশু খান, হর্ষ ও ভীম। এ নিয়ে এই মামলায় মোট সাত জন অভিযুক্ত পুলিশের জালে ধরা পড়ল। তদন্তকারীদের মতে, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং পটনা শহরে গ্যাং-স্ট্রাকচারের দখল ঘিরে সংঘর্ষের সূত্রপাত। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই পাটনার বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ঢুকে যে পাঁচ দুষ্কৃতী চন্দনকে গুলি চালিয়ে খুন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে বলবন্ত অন্যতম। ওই দিন হাসপাতালের বাইরে রবিরঞ্জন পাহারা দিচ্ছিলেন বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। চন্দন খুনের মেন শুটার ও প্রধান ষড়যন্ত্রকারী তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে বিহার পুলিশ। খুনের ঘটনায় কলকাতা থেকেও তৌসিফের খুড়তুতো ভাই নিশু খান সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলবন্ত ও রবিরঞ্জন কিছুটা সুস্থ হলে তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, পাটনার সামনপুরা এলাকায় নিশু খানের বাড়িতেই চন্দনকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়।