রাম মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের অর্থ দেশের পরিচয়কে অস্বীকার করা: শিবরাজ সিং চৌহান

নিউ দিল্লি, ১১ জানুয়ারি: আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সেই উপলক্ষে কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে। মমতার সুরেই কথা বলল কংগ্রেস। এই অনুষ্ঠানকে বিজেপি ও আরএসএস-এর রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে উল্লেখ করেছে শতাব্দী প্রাচীন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপ দাগলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। বুধবার সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান আসলে দেশের পরিচয় অস্বীকার করার মতো।

এদিন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “রাম আমাদের প্রভু। তিনি ‘আত্মা’র প্রতিভূ ও ‘ভারত’-এর পরিচয় বহন করেন। কংগ্রেস রাম মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের মধ্যে দিয়ে কার্যত ভারতের সংস্কৃতি ও পরিচয়কে অস্বীকার করেছে। কংগ্রেসের এই দলীয় অবস্থানের জন্য আজ দেশে তাদের জনসমর্থন তলানিতে ঠেকেছে।”

প্রসঙ্গত কংগ্রেস এই ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’র অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করার সময় বিজেপি ও আরএসএস-এর কর্মসূচি বলে অভিহিত করে। গতকাল বুধবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ জানান, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা – মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী ও অধীর রঞ্জন চৌধুরী অযোধ্যায় বিশাল অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।” দুই দিন আগে একই সুরে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে বিজেপির রাজনৈতিক গিমিক বলে উল্লেখ করেন।


এদিন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গত মাসে কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভার বিরোধী দলের নেতা শ্রী মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন, শ্রীমতি সোনিয়া গান্ধী ও লোকসভায় কংগ্রেসের সংসদীয় নেতা শ্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী আগামী ২২শে জানুয়ারী অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। ভগবান রামকে আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ পূজা করে। ধর্ম একটি ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আরএসএস ও বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে অযোধ্যায় মন্দিরের একটি রাজনৈতিক প্রকল্প তৈরি করেছে। বিজেপি ও আরএসএস-এর নেতাদের দ্বারা অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন স্পষ্টতই নির্বাচনী ফায়দা তোলার জন্য করা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২২ জানুয়ারী গ্র্যান্ড মন্দিরে রাম লালার মূর্তি স্থাপনে যোগ দিতে চলেছেন৷ মন্দিরের আধিকারিকদের মতে, অনুষ্ঠানটি ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু করে সাত দিন ধরে চলবে৷

সেইমতো আগামী ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির ‘প্রাণ প্রতিষ্টা’র জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। যা সমাজের সর্বস্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মানুষকে আকর্ষণ করবে। শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট ২২ জানুয়ারি দুপুরে রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে রাম লালাকে সিংহাসনে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অযোধ্যায় রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের জন্য বৈদিক আচার অনুষ্ঠান শুরু হবে ১৬ জানুয়ারি। অর্থাৎ এক সপ্তাহ আগে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। বারাণসীর একজন পুরোহিত, লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত ২২ জানুয়ারি রাম লালার অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রধান আচার অনুষ্ঠান করবেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যা অমৃত মহোৎসবকে চিহ্নিত করবে। অযোধ্যা ভগবান রামের জন্মস্থান। ভারতের মানুষের জন্য মহান আধ্যাত্মিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য বহন করে।