দেশশাসন শিখছি মোদির কাছ থেকে : রাহুল

রাহুল গান্ধি (Photo: IANS)

আমার এবং আমার পরিবারের প্রতি ব্যক্তিগত ঘৃণা পােষণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। এই দেশ ভালােবাসা এবং সম্মানের দেশ, কিন্তু মােদির মনে ঘৃণা রয়েছে।

একটি অনুষ্ঠানে আমি ভালােবাসার বার্তা দিতে চেয়েছিলাম তাঁকে, কিন্তু মােদি কোনও উত্তর দেননি। এমনকি সম্মান জানিয়েই আমি কথা বলতে চেয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে, কিন্তু তাঁর পরেও তিনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বলে শনিবার এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জানিয়েছেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধি।

রাহুল বলেন, দেশে এখন বিজেপি আরএসএস-এর বিচার ধারার সঙ্গে প্রগতীশীল শক্তি গুলির আদর্শের লড়াই চলছে। এর পরিণতির উপর নির্ভর করছে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ। তিনি বলেন, শুনেছি মােদি নাকি তিন ঘণ্টা ঘুমােন, বাকি সময়টুকু কাজ করেন। সেই কাজের পরিণতি কী, সেটামানুষকে জানাতে তিনি আমার সঙ্গে বিতর্কে বসুন যাতে আমরা দুর্নীতি, নােটবন্দি, পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) এবং কৃষকদের সমস্যা নিয়ে আলােচনা করতে পারি।


কংগ্রেস সভাপতি বলেন, মােদি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে দেশ শাসন করা উচিত নয়। এটাই আমরা শিখেছি মােদির কাছ থেকে। কেউ যদি কারোর কথা না শুনে, কারোর সঙ্গে পরামর্শ না করে দেশ শাসন করতে চায় তাহলে সে ব্যর্থ হবেই। পাঁচ বছর আগে মানুষ মনে করত নরেন্দ্র মােদি অজেয় কিন্তু তাতে আমরা দমে যাইনি। আমরা তাঁর মােকাবিলা করেছি সংসদে, আমরা মাঠে-ময়দানেও তাঁর সঙ্গে সম্মুখ সমরে উপস্থিত হয়েছি।

এখন মােদি ভয় পেয়ে গেছেন। আজ কেউ বলছে না যে নরেন্দ্র মােদি পরাজিত হতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন রাহুল। এরপর কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ভারতীয় সংবিধানের পক্ষে বিপজ্জনক এক নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি।

রাহুলের পিতা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির বিরুদ্ধে মােদির সাম্প্রতিক আক্রমণ প্রসঙ্গে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট বলেন, মােদি আমার পরিবারের তিনজন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছেন সত্যিটা আমি জানি। কিন্তু মােদির এই মিথ্যা রটনায় কিছুই যায় আসে না কারণ দেশের মানুষ সব জানেন এবং তার প্রমাণ মােদি পাবেন আগামী ২৩ মে।

কংগ্রেস নেতা সাম পিত্রোদার সাম্প্রতিক মন্তব্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাহুল বলেন পিত্রোদা যা বলেছন, সেটা ভুল, কারণ ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গা নিয়ে কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই, সেটা ছিল একটা ট্র্যাজেডি এবং যারাই এই হিংসার ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাঁদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।

এরপর মায়াবতী এবং অখিলেশ যাদব প্রসঙ্গেও রাহুল প্রশ্নকর্তার ফাদে পা না দিয়ে বলেন, বহুজন সমাজপার্টির নেত্রী মায়াবতী হলেন জাতীয় প্রতীক। উত্তরপ্রদেশে লােকসভা নির্বাচনে মায়াবতীর বিএসপি এবং অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির মহাগঠবন্ধনে কংগ্রেসের স্থান হয়নি কিন্তু তবু এ ধরনের অপ্রীতিকর প্রশ্ন এড়িয়ে রাহুল বলেন, আমি মায়াবতীকে শ্রদ্ধা করি। কারণ তিনি দেশকে সদর্থক বার্তা পৌছে দিয়েছেন তাই আমি তাঁকে শ্রদ্ধা করি এবং ভালােবাসি।

রাজনৈতিক যুদ্ধ হল আদর্শ ও নীতির যুদ্ধ এবং কংগ্রেস সেটাই করছে বলে মন্তব্য রাহুলের। তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হওয়ার প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে থাকার কথা নয়, কারণ এটি নির্ভর করে মানুষের ইচ্ছার উপর, যা জানা যাবে আগামী ২৩ মে। মানুষ যে রায় দেবেন সেটাই আমি এবং আমার দল মাথা পেতে নেব।

আপনার বিরুদ্ধে কোনও কটুক্তি কিংবা আপনাকে নিয়ে কোনও উপহাসের টুইট বা ব্লগ দেখে আপনার খারাপ লাগে না-এই প্রশ্নের উত্তরে রাহুল বলেন, আমি এসব দেখে কখনওই রাগ করি না বরং এগুলিকে আমি খুব উপভােগ করি।