মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কে ভারত-মার্কিন বাণিজ্যে শুল্কহার এক লাফে পৌঁছেছে ৫০ শতাংশে। এর ফলে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে ভারতীয় বাজারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের পোশাক ও বস্ত্র শিল্প।
ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের সভাপতি এসসি রালহান জানান, বিপুল পরিমাণ শুল্ক চাপানোর ফলে তিরুপুর, নয়ডা ও সুরাটের বস্ত্র উৎপাদন সংস্থাগুলি কার্যত উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। অধিক শুল্কের জেরে ভারতীয় পোশাক রপ্তানি ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে। পাশাপাশি মূল্যবান পাথর, গয়না, চিংড়ি, কার্পেট ও আসবাব প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিও বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
ট্রেড থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আমেরিকায় ভারতের রপ্তানি প্রায় ৪৩ শতাংশ কমে ৮৭ বিলিয়ন ডলার থেকে নেমে দাঁড়াতে পারে ৪৯.৬ বিলিয়ন ডলারে।
মার্কিন শুল্কে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারতের চিংড়ি রপ্তানি। এই খাতে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যেখানে ২০২৪-২৫ সালে রপ্তানি হয়েছিল ২ বিলিয়ন ডলার। পেট্রোপণ্যের ওপর ৬.৯ শতাংশ, অর্গ্যানিক কেমিক্যালসের ওপর ৫৪ শতাংশ এবং কার্পেট শিল্পে ৫২.৯ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে। পোশাক রপ্তানিতে ৬০.৩ থেকে ৬৩.৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যেখানে গত বছর এই খাতে ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছিল। টেক্সটাইল খাতেও পড়েছে বিরাট ধাক্কা, ৫৯ শতাংশ শুল্কে শিল্প কার্যত সংকটে।
হীরে, সোনার গয়না ও মূল্যবান পাথরের ওপর ৫২.১ শতাংশ শুল্ক, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামা রপ্তানিতে ৫১.৭ শতাংশ, মেশিনারির ওপর ৫১.৩ শতাংশ, গাড়ি ও যন্ত্রাংশে ২৬ শতাংশ এবং আসবাবের ওপর ৫২.৩ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
তবে ভারতীয় ওষুধ শিল্পকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবর্ষে আমেরিকায় ৯.৮ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ওষুধ রপ্তানি হয়েছিল, যা শুল্কমুক্ত থাকছে। ছাড় দেওয়া হয়েছে ভারতে তৈরি স্মার্টফোনেও। বিশেষত ভারতেই তৈরি আইফোন আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, যার রপ্তানি মূল্য গত বছর ছিল ১০.৬ বিলিয়ন ডলার।