অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসা আর যত্নের ভারে স্বামীকে ‘বোঝা’ হতে চাননি। সেই দুঃসহ মানসিক চাপ থেকে বেরোতে না পেরে শনিবার সকালে গ্রেটার নয়ডার এক বহুতলের ১৩ তলা থেকে ঝাঁপ দেন এক মহিলা এবং তাঁর ১১ বছরের ছেলে। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম সাক্ষী চাওলা (৩৭)। তাঁর ছেলের নাম দক্ষিণ। সে দীর্ঘদিন ধরেই নিউরোডেভেলপমেন্টাল অসুখে ভুগছিল। নিয়মিত ওষুধ খেতে হতো তাকে, অসুস্থতার জন্য স্কুলে যাওয়াও সম্ভব ছিল না। চব্বিশ ঘণ্টাই বিশেষ যত্নে রাখতে হতো। মা হিসেবে এই পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন সাক্ষী।
ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন সাক্ষীর স্বামী দর্পণ চাওলা, যিনি পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি অন্য ঘরে থাকায় স্ত্রীর সিদ্ধান্তের বা বিষয়ে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি। এদিন সকাল প্রায় ১০টা নাগাদ হঠাৎই আবাসনের নীচে হট্টগোল শুরু হলে ছুটে যান বারান্দায়। সেখান থেকে তিনি দেখতে পান, মাটিতে নিথর হয়ে পড়ে আছেন স্ত্রী এবং ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি পরিষেবাকে খবর দেন। চিকিৎসকরা এসে দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ পরে ফ্ল্যাট থেকে একটি আত্মহত্যার চিরকুট উদ্ধার করে। সেখানে সাক্ষী স্বামীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন— তিনি আর তাঁর উপরে বোঝা হতে চান না। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। দুঃখিত। আমরা তোমাকে আর কষ্ট দিতে চাই না। আমাদের কারণে তোমার জীবন নষ্ট হওয়া উচিত নয়। আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’
নয়ডা পুলিশ জানিয়েছে, অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগই এই মর্মান্তিক সিদ্ধান্তের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।