প্রবল বন্যায় ধ্বংসস্তূপ উত্তরাখণ্ড, নদীতে ভেসে গেল ট্রাক্টরসহ ১০ শ্রমিক

প্রেম নগরে এনডিআরএফের উদ্ধারকাজ এবং বিকাশনগরের টনস নদীতে ট্র্যাক্টর সহ ১০ জন ভেসে যাওয়ার দৃশ্য।

প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাহাড়ি ঝড়-বৃষ্টির দাপটে ভেঙে পড়ছে সেতু, নদীর জল গ্রাস করছে ঘরবাড়ি। দেহরাদুন, মুসৌরি থেকে মাল দেবতা— সর্বত্রই চলছে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ। কার্যত বন্যায় তছনছ উত্তরাখণ্ডের একাধিক এলাকা। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী আরও কিছু দিন বৃষ্টি চলতে পারে পাহাড়ি জেলায়। ফলে বিপদ এখনও কাটেনি।

এদিকে দেহরাদুনের বিকাশনগরে টন্স নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সোমবার সেই নদীতেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছেন গ্রামবাসীরা। একটি ট্রাক্টর নিয়ে মাঝ নদীতে আটকে পড়েন অন্তত ১০জন শ্রমিক। মুহূর্তের মধ্যে বেগবান নদীর স্রোত ট্রাক্টরটিকে উলটে দিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আত্মীয়রা চিৎকার করে তাঁদের নাম ধরে ডাকলেও প্রবল স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে আর ওপারে পৌঁছতে পারেননি কেউ। নিখোঁজ শ্রমিকদের খোঁজ চলছে, ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে রাতদিন এক করেছে এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ। প্রাথমিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা খনির কাজে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কীভাবে ট্রাক্টরটি নদীর মাঝে গিয়ে পড়ল, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।

অন্যদিকে, দেহরাদুনের প্রেমনগরের ঠাকুরপুরে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ভয়ঙ্কর দৃশ্য। স্বর্ণা নদীর স্রোতে ভেসে যায় একটি শিশু। মাঝ নদীতে আটকে পড়ে সে। মুহূর্তের মধ্যে খবর পৌঁছয় এনডিআরএফ-এর কাছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দড়ি বেয়ে ঝাঁপ দেন এক জওয়ান। পোল বেয়ে পৌঁছে গিয়ে শিশুটিকে তুলে আনেন নিরাপদে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় স্বস্তি ফিরলেও আতঙ্ক কাটেনি।


প্রবল বর্ষণে রাজ্যের বহু সড়ক ও সেতু ভেঙে পড়েছে। দেহরাদুনের প্রেমনগরে আইন কলেজের কাছে বন্যার জল গ্রাস করেছে একটি আস্ত সেতু। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, বহু মানুষ আটকে পড়েছেন গ্রামে। প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০০ জনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে।` মঙ্গলবার সকালেই সাহস্রধারা নদীতে মেঘভাঙা বৃষ্টি নেমে আসে। এক ধাক্কায় ভেসে যায় দুটি দোকান। এখনও নিখোঁজ দু’জন। এদিকে তমসা নদীর জলে তলিয়ে যায় তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির চত্বর। যদিও হতাহতের কোনও খবর নেই।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের সমস্ত বড় নদীগুলি এখন উত্তাল। জলের চাপে বহু রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ ও প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে রয়েছে সরকার।’