তিনদিন পর প্রধানমন্ত্রীর শান্তির আবেদন

দাঙ্গা উপদ্রুত এলাকা। (Photo by Sajjad HUSSAIN / AFP)

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি রাজধানী শহরে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। দিল্লিতে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনায় এপর্যন্ত তেইশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানাে হয়েছে। তিনি প্রশাসনকে অবিলম্বে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

সিএএ নিয়ে পাথর ছোঁড়া ও গাড়ি ও বাড়িতে অগ্নি সংযােগের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে এমন দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট উপদ্রুত এলাকায় সিবিএসই পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। দিল্লির বিক্ষোভের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এই প্রথম টুইট করে অবিলম্বে উপদ্রুত এলাকায় শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু বুধবার সকালেও সিএএ বিরােধী ও পক্ষের দুই গােষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোঁড়া ও নাশকতার ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে রাজধানী শহরের উপদ্রুত এলাকায় শান্তি প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধানের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশ মােতায়েন করা হয়েছে এবং সন্ধের সময় উপদ্রুত এলাকায় ফ্ল্যাগমার্চ করবে, তাই এলাকার বাসিন্দাদের ভয়ের কোনও কারণ নেই।


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, দিল্লির বিভিন্ন অঞ্চলে নিবিড় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে দিল্লি পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা দ্রুত স্বাভাস্কি অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকমের চেষ্টা করছে। দিল্লির মানুষের উদ্দেশে তিনি টুইটে আহ্বান জানান, দিল্লির ভাই ও বােনেরা শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন। অবিলম্বে রাজধানী শহরে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসাই কাম্য।

এদিন সকালে আবার ভজনপুরা এলাকায় নতুন করে পাথর ছোঁড়া ও অগ্নি সংযােগের ঘটনা ঘটে। একটি ব্যাটারির দোকানে লঠ ও আগুন লাগানাে হয় এবং পােড়া ব্যাটারি সড়কের ওপর নিক্ষেপ করা হয়।

এদিন এক গােয়েন্দা অফিসার অঙ্কিত শর্মার দেহ চাদবাগ এলাকার একটি নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন একটি ব্রিজের ও একটি গােষ্ঠীর দুষ্কৃতীরা তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে।

কংগ্রেস প্রধান সােনিয়া গান্ধি রাজধানী শহর দিল্লিতে হিংসাত্মক ঘটনার জন্য কেন্দ্র সরকারকে দায়ী করেন এবং অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি করছেন। শহরে শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি দেখেও কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আধাসামরিক বাহিনী মােতায়েন করলেন না? রাজধানীতে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেন।

নাশকতা ও সংঘর্ষের সময়ে দিল্লি পুলিশ সক্রিয়তা না দেখানােয় কঠোর সমালােচনার মুখে পড়েছে। অবস্থা সামাল দিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশকে কাজে না লাগানাের জন্যও সমালােচনার মুখে পড়েন দিল্লির পুলিশ কমিশনার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল শহরে উপদ্রুত এলাকা শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেনা নামানাের সুপারিশ করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রকের পক্ষে জানানাে হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও আধাসমারিক বাহিনীর জওয়ান অবস্থা মােকাবিলায় মােতায়েন রয়েছেন।

সংঘর্ষে আহতদের অবিলম্বে যথাযথ চিকিৎসার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা কার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। বিচারপতি এ মুরলিধরের বাসভবনে এদিন দুই বিচারপতি বিশিষ্ট বেঞ্চ বসে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার জন্য আবেদনের শুনানির জন্যই এই জরুরি আদালত বসে।