হরিয়ানার গুরুগ্রামের শিকোহপুর গ্রামের জমি চুক্তির সঙ্গে যুক্ত অর্থ পাচারের মামলায় মঙ্গলবারের পর আবার বুধবারও ইডির সদর দপ্তরে গেলেন রবটি বড়রা। বুধবারও তলব করা হয়েছিল কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী তথা ব্যবসায়ী রবার্ট বড়রাকে। বুধবার তাঁকে দু’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ইডি দপ্তরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বড়রাও। দপ্তরের ভিতরে ঢোকার আগে প্রিয়াঙ্কাকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায় রবার্টকে।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রবার্ট বড়রা বলেন, ‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। আমাদের নিশানা করা হচ্ছে।’ বডরার দাবি, ‘সময় পরিবর্তনশীল। আজ আমরা কষ্ট পাচ্ছি, যদি সময় বদলে যায় ওদেরও কষ্ট পেতে হবে।’ ইডির তলব নিয়ে রবার্ট বলেন, ‘আমি কিছুই লুকোইনি। আমাকে দুইবার ক্লিনচিট দেওয়ার পরও বুঝতে পারছি না কেন সাত বছর পর একই বিষয়ে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আমি ইডির তলব এড়িয়ে যাব না।’
মঙ্গলবার এপিজে আব্দুল কালাম রোডে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার সদর দপ্তরে পৌঁছনোর পর ৫৬ বছর বয়সী রবার্ট বড়রা মামলাটিকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতা। বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ইডি-র কাছ থেকে এই জিজ্ঞাসাবাদের হাজিরা সংক্রান্ত সমন পাওয়ার আগের দিনই আগেই রবার্ট জানিয়েছিলেন, যদি কংগ্রেস চায়, তাহলে তিনি রাজনীতির ময়দানে নামতে প্রস্তুত। তিনি বলেছিলেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইলে তিনি পরিবারের আশীর্বাদ নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেবেন।
২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি কর্তৃক ৭.৫ কোটি টাকায় কেনা একটি জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ, ওই জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল, যা শেষ হতে সাধারণত বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। পরে জমিটি ৫৮ কোটি টাকায় বিয়য়ল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যদিও ২০২৩ সালে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খটরের সরকার আদালতে স্বীকার করে নেয়, রবার্টের সংস্থার সঙ্গে ডিএলএফের জমি চুক্তিতে বেআইনি কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অন্য একটি মামলাতেও রবার্টের নাম জড়িয়ে পড়ে। ইডির অভিযোগ, ২০০৯-এ অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে রবার্ট লন্ডনেও একটি ‘বেনামি’ সম্পত্তি কিনেছিলেন। সেই মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রিয়াঙ্কারও। লন্ডনের ওই বাড়ি নিয়ে রবার্ট ও তাঁর সচিবের কিছু ইমেলের আদান প্রদানের ‘তথা’ প্রকাশ্যে আনে মোদী সরকার। যেখানে বাড়িটি মেরামতির জন্য টাকাপয়সা দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের কথা হয়েছে। লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বাড়িটি নাকি এক বছরের মধ্যে বিক্রিও করে দেওয়া হয়। ওই মামলায় ২০১৯ সালেও দীর্ঘ জেরা করা হয় রবার্টকে।