সেনার চাকরি থেকে বরখাস্ত নার্সকে পুনর্বহালের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের 

দিল্লি, ২১ ফেব্রুয়ারি – বিয়ে করার কারণে সেনার চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে হয় এক নার্সকে। ‘বিয়ে’কেই বরখাস্তের কারণ হিসেবে খাড়া করা হয়েছিল সেনার তরফে। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। এই বিষয়টি ‘লিঙ্গ বৈষম্য’-এর এক বড় উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছে আদালত। একই সঙ্গে ৬০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।

সেলিমা জন নামে এক মহিলা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তাঁর বিয়ে হয়। এরপরই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। তাঁকে যখন বরখাস্ত করা হয় তখন তিনি লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন। তাঁর চাকরি যাওয়ার কারণ হিসেবে সেলিমার বিয়েকেই কারণ হিসেবে ধরা  হয়েছিল।বেশ কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পর ২০১২ সালে সেলিমা সশস্ত্র বাহিনীর ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। মামলার রায় সেলিমের পক্ষেই যায়।
ট্রাইব্যুনাল জানায়, সেলিমাকে বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি। তাঁকে কাজে পুনর্বহাল করতে হবে। এরপর ২০১৯ সালে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে কেন্দ্রীয় সরকার। 
নির্দেশ দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ১৯৭৭ সালে একটি নিয়ম আনা হয়েছিল সেনাবাহিনীতে। সেই নিয়মে উল্লেখ করা হয়েছিল, বিবাহের কারণে সামরিক নার্সিং চাকরিতে কর্মরত কোনও সদস্যকে বরখাস্ত করা যাবে। তবে ১৯৯৫ সালে সেই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার সেই নিয়মের কথা বলতে পারে না। আদালত আরও বলে, ‘‘এই ধরনের নিয়ম স্পষ্টতই স্বেচ্ছাচারী ছিল। লিঙ্গ বৈষম্যের এমন নিয়ম থাকা উচিত নয়। লিঙ্গ-ভিত্তিক পক্ষপাতিত্ব সংবিধান বিরোধী।’’
 
সেই মামলায় ফের ধাক্কা খেল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের উপর কোন হস্তক্ষেপ না করে জানায়, আগের নির্দেশই বহাল থাকবে। শুধু তা-ই নয়,  বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ কেন্দ্রকে বলে, সেরিনাকে ৬০ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।