ভারতীয় মুদ্রার দামে পতন অব্যাহত, উদ্বেগে অর্থনৈতিক মহল

ভারতীয় মুদ্রা

ভারতের মুদ্রার বাজার এখনও অস্থিতিশীল। নিয়মিত কমছে রুপির দর। সোমবারের পর মঙ্গলবারও ফের পতন হওয়ায় সোমবারের রেকর্ডও ভেঙে যায়। মঙ্গলবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দাম হয়েছে ৮৯.৮৫ টাকা।  মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার মান সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গিয়েছে।

সোমবার ডলারের বিপরীতে টাকার দাম দাঁড়িয় ৮৯.৭৩-তে। মাত্র ২ সপ্তাহ আগে ভারতীয় মুদ্রা তার আগের সর্বনিম্ন রেকর্ড ৮৯.৪৯ দরে পৌঁছেছিল। এবার সেইসব রেকর্ডও ছাপিয়ে গিয়েছে। টাকার দামে এই পতনে উদ্বেগ বাড়ছে দেশের অর্থনৈতিক মহলে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় বাজেট। তার আগে স্বস্তিতে নেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, তা সহজেই অনুমেয়।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৪.৮ শতাংশ। শুধু ডলারই নয়, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ব্রিটিশ পাউন্ড-ইউরো এবং জাপানিজ ইয়েন-চিনা ইউয়ান, বিশ্বের অন্য চার প্রধান মুদ্রার বিনিময় দরেও যে পরিমাণ পতন হয়েছে টাকার, তা গত এক বছরে সর্বাধিক।
অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির শক্ত ভিত্তি শেয়ারবাজারকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে গেলেও চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করা মুদ্রাগুলোর তালিকায় রয়েছে রুপি। অর্থনীতিবিদদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নিয়মিত হস্তক্ষেপ না থাকলে রুপির পতন আরও বড় হতে পারত।
রুপির দরে এই পতন এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন ভারতের জিডিপি বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষে দেশের জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৮.২ শতাংশে।এক সংবাদ সংস্থার পূর্বাভাস ছিল ভারতের জিডিপি হবে ৭. ৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান সেই পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই শক্তিশালী জিডিপি রুপিকে খুব একটা স্বস্তি দিতে পারেনি। এর একটা বড়  কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তিতে কোনও অগ্রগতি না থাকা। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের যে ধরণের প্রতিক্রিয়া মেলে, তাতে আশা জেগেছিল যে ভারতীয় রপ্তানির ওপর আরোপিত চড়া ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক হয়তো শীঘ্রই কমানো হবে। কিন্তু কোনও সুনির্দিষ্ট চুক্তি না হওয়ায় তা রুপির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।


ফলে মুদ্রার স্থিতিশীলতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি তুলে নিয়েছেন। এদিকে, গত অক্টোবরে ভারতের পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিও সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।