বিহার নির্বাচনে এনডিএ–র জয়ের পিছনে বিরাট ভূমিকা রয়েছে মহিলাদের ব্যাঙ্কে সরাসরি দশ হাজার টাকা করে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্তে। রবিবার এমনই অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সাংসদ তারিক আনোয়ার। তাঁর দাবি, এই উদ্যোগকে ভোটের আগে ‘লাভের রাজনীতি’ হিসেবে ব্যবহার করেছে জোটসঙ্গী শাসকদল। ফলে বিরাট সংখ্যক মহিলা ভোটার শেষ পর্যন্ত এনডিএ–তেই ভরসা করেছে।
তারিক আনোয়ার বলেন, ‘মহিলাদের কাছে সরাসরি টাকার সুবিধা দেওয়ায় ভোটে একতরফা প্রভাব পড়েছে। মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন নয়, তাৎক্ষণিক লাভ দেখিয়ে আকৃষ্ট করা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত ভোটের আগে নেওয়া হলে তা যে রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়, তা কারও অজানা নয়।’
এই প্রসঙ্গে তারিক আনোয়ার মন্তব্য করেছেন, ‘যখন চাকরি, শিল্প, শিক্ষা, চিকিৎসা সব খাতে মানুষ বিপাকে, তখন শুধু টাকা দিয়ে সমস্যা ঢাকতে চায় সরকার। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এর কোনও সুফল নেই।’
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এনডিএ উন্নয়ন এবং মৌলিক পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রশ্নে কোনও কাজ দেখাতে পারেনি। তাই মহিলা ভোটারদের আকৃষ্ট করতেই নগদ সুবিধাকে হাতিয়ার করা হয়েছে।
বিরোধীরা আরও তোপ দেগে বলছে… বিহারের অন্যান্য বিরোধী দলও একই অভিযোগ তুলেছে। তাদের মতে, শাসকদল ভোটের আগে আর্থিক সুবিধা ঘোষণা করে নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘন করেছে। তবে এনডিএ জোট এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, ‘এটি মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রকল্প। এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিহারে মহিলা ভোটারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনডিএ গত কয়েক মাস ধরেই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী, ক্ষুদ্র ব্যবসা সহায়তা এবং ব্যাঙ্ক–সুবিধার প্রচারে বিশেষ জোর দিয়েছিল। সেই সঙ্গে ভোটের মুখে ব্যাঙ্কে দশ হাজার টাকা জমা দেওয়ার ঘোষণা বিহারের মহিলাদের একটি বড় অংশকে প্রভাবিত করেছে বলেই বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহিলা কল্যাণ স্কিম আগামী কয়েক বছরেও বিহারের রাজনৈতিক রণকৌশলের প্রধান অস্ত্র হয়ে থাকবে। কংগ্রেস এখন ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করছে এবং মহিলা ভোটে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করতে চাইছে বলে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।