গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিধ্বস্ত বাসিন্দাদের সহায়তার নাম করে চাঁদা তুলে সেই অর্থে বিলাসবহুল জীবনযাপনের অভিযোগে গুজরাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক সিরিয়ার নাগরিককে। ধৃতের নাম মেঘাত আল-আজহার। তিনি গুজরাতের আহমেদাবাদের এলিস ব্রিজ এলাকার একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার হন। তাঁর সঙ্গে থাকা আরও তিন সিরিয়ার নাগরিক – জাকারিয়া হাইথাম আলজার, আহমেদ আলহাবাস এবং ইউসুফ আল-আজহার বর্তমানে পলাতক। তাঁদের খোঁজে লুকআউট নোটিস জারি করেছে পুলিশ।
গুজরাত পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) শরদ সিঙ্ঘল জানান, গাজাবাসীদের সাহায্যের নামে অর্থ সংগ্রহের তথ্য বেশ কিছুদিন ধরেই পুলিশের কাছে আসছিল। অনুসন্ধানের পর দেখা যায়, এই অর্থ তুলছিলেন সিরিয়া থেকে আগত চারজন পর্যটক। তাঁরা এলিস ব্রিজ এলাকার বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে গাজার ধ্বংসচিত্র ও ভিডিও দেখিয়ে সহানুভূতি আদায় করতেন এবং সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে অনুরোধ করতেন।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ওই চারজন গত ২২ জুলাই পর্যটক ভিসায় প্রথমে কলকাতায় আসেন। সেখান থেকে ২ আগস্ট পৌঁছন আহমেদাবাদে এবং এক হোটেলে ওঠেন। কলকাতায় তাঁদের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তদন্তকারীদের অনুমান, গাজা-সহযোগিতার আড়ালে তাঁরা অন্য কোনও উদ্দেশ্যেও ভারতে এসেছিলেন কিনা, সেই বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই অর্থ তাঁরা গাজাবাসীদের সাহায্যের নামে তুলেছিলেন, কিন্তু তার কোনও অংশই গন্তব্যে পাঠানো হয়নি। বরং, সেই টাকা নিজেদের বিলাসবহুল জীবনযাপনে ব্যবহার করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এই ঘটনায় গুজরাত পুলিশের অপরাধ দমন শাখা, সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস) এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। পলাতক তিন অভিযুক্তকে দ্রুত খুঁজে বার করার চেষ্টাও চলছে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘গাজাবাসীদের সাহায্যের নামে চাঁদা তোলা হলেও তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা অর্থপ্রেরণের রেকর্ড মেলেনি। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও আন্তর্জাতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা, তাও আমরা খতিয়ে দেখছি।’