হিন্ডেনবার্গ মামলায় সেবির উপর আস্থা রাখল সুপ্রিম রায় 

দিল্লি, ৩ জানুয়ারি – হিন্ডেনবার্গ মামলায় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে সেবির উপর আস্থা রাখল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে স্বস্তি মিলল আদানি গোষ্ঠীর। বুধবার হিন্ডেনবার্গ মামলায় সিবিআই বা সিট গঠন করে তদন্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। হিন্ডেনবার্গ মামলায় সেবি-র তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করা হয়। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় সেবি-র তদন্তে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। 
 
বুধবার শীর্ষ আদালত এই রায় দেওয়ার পর আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া, “মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় এটাই বুঝিয়ে দিল যে, সত্যের জয় হবেই।’’ এর পর ওই বাক্যটির প্রচলিত হিন্দি ব্যাখ্যা দিয়ে আদানি লিখেছেন, ‘‘সত্যমেব জয়তে”। তিনি আরও লেখেন, “যাঁরা আমাদের পাশে থেকেছেন , তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে আমাদের সামান্য অবদান অব্যাহত থাকবে। জয় হিন্দ।”
 
গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা বেনামী অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগ করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং ঘুরপথে কোটি কোটি টাকা আয় করত। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পরই ব্যাপক পতন হয় আদানির শেয়ারে। এই মামলায় সিট তদন্তের দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি, এমএল শর্মা এবং কংগ্রেস নেত্রী জয়া ঠাকুর ও অনামিকা জয়সওয়াল। ২৪ নভেম্বর এই মামলার শুনানি শেষ হয়। রায় ঘোষণা সংরক্ষিত ছিল।
 
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলার তদন্ত সেবির থেকে নিয়ে সিটের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য যথাযথ তথ্য প্রমাণ বা ভিত্তি নেই। শুধুমাত্র জর্জ সোরেসের হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে সেবির তদন্তকে প্রশ্ন করা যায় না।
 
এদিনের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জানানো হয়, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা শেয়ার কারচুপির অভিযোগের তদন্ত সেবি-ই করবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “সেবির কাজে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা সীমিত। এমন কোনও যোগ্য তথ্য প্রমাণ নেই, যার ভিত্তিতে এই মামলার তদন্তভার সেবি বদলে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেবি ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করবে। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ২২টি মামলার মধ্যে ২০টিরই তদন্ত শেষ করেছে সেবি। সলিসিটর জেনারেলের আশ্বাস গ্রহণ করেই আমরা আগামী ৩ মাসের মধ্যে বাকি ২টি মামলার তদন্তও শেষ করার নির্দেশ দিচ্ছি।”