গণপিটুনিতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য। বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে এই অভিযোগ তুলেছিল, ‘ইন্ডিয়ান মুসলিম ফর প্রোগ্রেস অ্যান্ড রিফর্মস’ (আইএমপিএআর)। শীর্ষ আদালতে আইএমপিএআর-এর তরফে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের আর্জি জানানো হয়েছিল। আগামী ২৩ এপ্রিল বুধবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার পরবর্তী শুনানি। বিচারপতি বিআর গবাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চে আগামী বুধবার মামলাটির শুনানি হবে বলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
আইএমপিএআর-এর আবেদনে আরও বলা হয়েছিল, বর্তমান প্রথা বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানের ১৪, ১৫ ও ২১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। কয়েকটি রাজ্যে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নেই বলে অভিযোগ আবেদনকারীর।
প্রসঙ্গত ধর্মীয় বিদ্বেষজনিত হিংসা বা স্বঘোষিত গোরক্ষকদের হামলার গত এক দশকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে অভিন্ন নীতি প্রণয়নের জন্য আইএমপিএআর ২০২৩ সালে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জবাব চেয়েছে শীর্ষ আদালত। সমাজকর্মী তহসিম পুনাওয়ালার দায়ের করা একটি মামলায় বিদ্বেষজনিত হিংসা রুখতে এবং ক্ষতিপূরণের অভিন্ন ব্যবস্থা চালু করতে নতুন আইন প্রণয়নের কথা চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই পরামর্শ দেয়। বিচারপতি এএম খান উইলকরের পাশাপাশি, ওই বেঞ্চে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
যদিও ২০১৯ সালে এই মামলার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘নরেন্দ্র মোদীর জমানায় দেশে গণপিটুনির ঘটনা আদৌ বাড়েনি। নতুন আইনেরও কোনও প্রয়োজন নেই।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই অবস্থান সত্ত্বেও পরবর্তী সময়ে হিন্দি বলয়ের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক বিদ্বেষজনিত হিংসার ঘটনা ঘটে। আর গোরক্ষার নামেই অধিকাংশ গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। হরিয়ানার মনু মানেসরের মতো স্বঘোষিত গোরক্ষা আন্দোলনের নেতা এই ধরনের ঘৃণা ছড়িয়ে ইউটিউবের ‘সিলভার প্লে বাটন’ পুরস্কার পেয়েছেন।