আরাবল্লী নিয়ে আগের নির্দেশ স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

আরাবল্লী পাহাড়ের ‘সংজ্ঞা’ নির্ধারণ সংক্রান্ত আগের রায় আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। সোমবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মতে, এই বিষয়ে আরও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও বিস্তৃত পর্যালোচনা প্রয়োজন। তাই এই মুহূর্তে অরাবল্লী পাহাড়ের চূড়ান্ত সংজ্ঞা নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক অরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির একটি নতুন সংজ্ঞা প্রস্তাব করে। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা নয়, বরং আশপাশের এলাকার তুলনায় যেসব ভূখণ্ডের উচ্চতা ১০০ মিটার বা তার বেশি, কেবল সেগুলিকেই আরাবল্লী পাহাড় হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়। গত ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চ ওই সংজ্ঞায় সিলমোহর দিয়ে একটি রায় ঘোষণা করেছিল।

তবে রায় ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। রাজস্থান ও হরিয়ানার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় মানুষজন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রতিবাদে নামেন। পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই সংজ্ঞা কার্যকর হলে আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির বিস্তীর্ণ অংশ সংরক্ষণের আওতার বাইরে চলে যেতে পারে। এর ফলে খনন, নির্মাণ ও শিল্প প্রকল্পের পথ আরও প্রশস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিবেশের ভারসাম্য, ভূগর্ভস্থ জলস্তর এবং জীববৈচিত্র্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তাঁদের মত।

এই পরিস্থিতিতে গত শনিবার স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার বড়দিনের ছুটির মধ্যেও অবকাশকালীন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি জেকে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসীহর বেঞ্চ আগের নির্দেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানায়। পাশাপাশি, আরাবল্লী পাহাড়ের সংজ্ঞা নির্ধারণের ফলে পরিবেশের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয় শীর্ষ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২১ জানুয়ারি।