পথকুকুর মামলায় দিল্লির প্রশাসনকে তুলোধনা সুপ্রিম কোর্টের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে পথকুকুর সরানো নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অবিলম্বে পুথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে পশুপ্রেমীদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, পথকুকুরদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্রই তো প্রস্তুত নেই। তাদের ধরার পর তাহলে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে ? সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশের উপর আংশিক স্থগিতাদেশের আর্জি জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার পথকুকুর সংক্রান্ত মামলার রায় স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, এই মামলার রায় পরে ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ।

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের রায় নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। এই আবহে রায় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন প্রধান বিচারপতি বিআর গাবাই। নতুন বেঞ্চও তৈরি করে দেয় শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এনভি আঞ্জারিয়ার আদালতে মামলার শুনানি হয়।

বৃহস্পতিবার দিল্লির স্থানীয় পুর-প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘আইনসভা আইন তৈরি করে। কিন্তু সেই আইন কার্যকর করার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু তারা তাদের কর্তব্য পালন করছে না । তাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত।’


এদিন শুনানি চলাকালীন দিল্লি সরকারের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক হয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পথকুকুরদের নিয়ে সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘কেউ পশুদের বিরুদ্ধে নয়। বন্ধ্যাকরণের পরেও কুকুরের কামড়ের ঘটনা থামছে না।তাই নিরাপত্তার প্রয়োজন।’ সলিসিটর জেনারেল বলেন যে, ‘কেউ কুকুরগুলিকে হত্যা করতে বলছে না। আমরা শুধু তাদের মানুষের বসতি থেকে দূরে রাখতে বলছি। মানুষ বাচ্চাদের বাইরে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে এক পক্ষ সরব থাকে, অন্য পক্ষ চুপচাপ সহ্য করে। আমরা এমন ভিডিও-ও দেখেছি যেখানে অনেকে মুরগির ডিম বা এই জাতীয় খাবার খেয়ে নিজেদের পশুপ্রেমী বলে দাবি করেন। ‘ তিনি আদালতে যে তথ্য পেশ করেন তাতে দেশে বছরে ৩৭ লক্ষ কুকুর কামড়ানোর ঘটনা নথিভুক্ত।

অন্যদিকে, কুকুরদের দেখভাল করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে এ দিন সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি আদালতে জানান, পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সিব্বল বলেন যে, ‘আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে যে কুকুরগুলিকে বন্ধ্যাকরণের পরে ছেড়ে দেওয়া হবে না। তাহলে তারা কোথায় যাবে ? যখন প্রচুর সংখ্যক কুকুরকে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে একসঙ্গে রাখা হবে, তখন তারা একে অপরকে আক্রমণ করবে, এটি মানুষের উপরও প্রভাব ফেলবে।এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার দরকার।’ সিব্বল জানান, গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে ইতিমধ্যেই ৭০০ পথকুকুরকে ধরা হয়েছে। ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশের উপর আংশিক স্থগিতাদেশ দাবি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র এবং অন্য পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে রায়দান স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট।