পাশ হওয়া বিল আটকে রাখা নিয়ে রাজ্যপালদের ভূমিকায় সরব হলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি

দিল্লি, ৩১ মার্চ – রাজ্যপালদের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন।  বিধানসভায় পাশ হওয়া রাজ্য সরকারের বিল আটকে রাখছেন কয়েকজন রাজ্যপাল। এবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন নাগারত্ন। সম্প্রতি হায়দরাবাদের নালসার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ক একটি কর্মশালায় যোগ দেন তিনি। সেখানেই নিজের ভাষণে বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, কিছু রাজ্যপাল রাজ্যের বিলে সম্মতির বদলে আটকে রাখছেন। প্রত্যেক রাজ্যপালের নিজের কর্তব্য পালন করা উচিত। এই বিষয়ে আদালতের নির্দেশিকা জারি ভালো দেখায় না। তিনি বলেন, অনেক রাজ্যপাল সাংবিধানিক গণ্ডির বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। এটা দুর্ভাগ্যের যে দেশের শীর্ষ আদালতকে বারে বারে রাজ্যপালদের সঠিক পথে চলার পরামর্শ দিতে হচ্ছে। 

নালসার বিশ্ববিদ্যালয়ে আদালত এবং সংবিধান সংক্রান্ত কর্মশালার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাগারত্ন। বিজেপি সরকারের নোটবন্দির সমালোচনা করেন তিনি। দেশে গণতন্ত্রের মান এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশের প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের এই বিচারপতি  সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, কোনওরকম আলাপ-আলোচনা ছাড়াই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। হঠাৎ করেই এক সন্ধ্যায় নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়। বিচারপতির কথায়, বলা হয়েছিল কালো টাকা আটকাতে এই সিদ্ধান্ত। বাস্তবে বিত্তশালীরা কালো টাকা সাদা করে নিয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়েছেন। বিপদ বেড়েছে ছোট ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের। তিনি বলেন, নোটবন্দির সুবিধা নিয়েছে অসৎ কারবারিরা, হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।  সাম্প্রতিকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন নাগারত্ন। বলেন, ইদানীং দেশে রাজ্যপালদের মধ্যে নতুন একটি বিষয় চোখে পড়ছে। বিল আটকে রাখবেন না, সংবিধান মেনে কর্তব্যপালন করুন, রাজ্যপালকে এমন নির্দেশ দেওয়া আদালতের জন্য অস্বস্তির।

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের চার বিচারপতি নোটবন্দির সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছিল।কিন্তু সেই সময় বিপরীত পথে  হেঁটেছিলেন বিচারপতি নাগারত্না। তিনি ডিসেন্ট নোট দিয়ে বলেছিলেন এর খারাপ ফল দেশবাসীকে ভুগতে হবে। বাস্তবে সেটাই হয়েছে বলে বিরোধী দলগুলিরও অভিযোগ। 


বিচারপতি নাগারত্না রাজ্যপালদের বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রাখাকে সাংবিধানিক ব্যবস্থায় বিপদের নয়া প্রবণতা বলে উল্লেখ করেছেন। দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি পাঞ্জাব ও তামিলনাড়ুর রাজ্যপালদের নাম করেছেন। বলেছেন, আদালতকে বলতে হয়েছে, সংবিধান মেনে কাজ করুন। বিল দিনের পর দিন আটকে রাখতে পারেন না রাজ্যপালেরা।