‘এক দেশ এক ভোট’-এর পক্ষে সওয়াল কোবিন্দ কমিটির, রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট জমা

দিল্লি, ১৪ মার্চ – ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে তৈরী হওয়া মোদি সরকারের কমিটি  রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিল। বৃহস্পতিবার ওই কমিটির প্রধান তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দেন। সেখানে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ কমিটির অন্য সদস্যরা। এই কমিটি লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একসঙ্গে করার সুপারিশ করেছে। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগেই কমিটির তরফে এই রিপোর্ট পেশ করা হল। বৃহস্পতিবার আট খণ্ডের ১৮ হাজার পাতার রিপোর্টটি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়ার পরে শাহের দাবি, ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সুপারিশগুলি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হয়েছে  ।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর এক্স হ্যান্ডেলে বৃহস্পতিবার একটি পোস্ট করা হয়।  সেই পোস্টে ছিল, ‘ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ যিনি ‘এক দেশ এক ভোট’ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন , তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ , আইন ও বিচারমন্ত্রী অর্জুন র্যাম মেঘাওয়াল, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ-সহ কমিটির সদস্যদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে দেশে একসঙ্গে নির্বাচনের প্রতিবেদন পেশ করেছেন।’  
 
লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হতে পারে আর কয়েক দিনের মধ্যেই। তার ঠিক আগেই এই রিপোর্ট পেশ হওয়ায় নতুন  বিতর্ক দানা বাঁধছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে,  কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতির বিরোধী। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদি সরকার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী ।
 
বিরোধীদের একাংশের আশঙ্কা, পরবর্তী ক্ষেত্রে এই নীতি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলিকে কার্যত ক্ষমতাহীন করে দেওয়া হবে।  পঞ্চায়েত-পুরসভা ভোটকেও এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ সংক্রান্ত মামলায়  সেখানকার পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভার ভোটের আয়োজনের কথা বলেছে মোদি সরকার। তা ছাড়া, ‘এক ভোট’ ব্যবস্থা চালুর পরে কেন্দ্রে বা কোনও রাজ্যে পাঁচ বছরের আগেই নির্বাচিত সরকার পড়ে গেলে কী হবে, প্রশ্ন  তা নিয়েও।
 
যদিও মোদি সরকারের যুক্তি,  লোকসভা ভোটের সঙ্গে সব রাজ্যের বিধানসভা ভোট সেরে ফেলতে পারলে নির্বাচনের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির মতো কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাবে না।