দেশে বিমান পরিষেবা আগামী কয়েক দিনে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। সৌর বিকিরণের অস্বাভাবিক তীব্রতার জেরে বিমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটি দিতে পারে। এমনই আশঙ্কায় আগেভাগেই সতর্কবার্তা জারি করেছে ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস। এই তিন বিমান পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছাড়তে পারে বহু বিমান, পরিবর্তন করা হতে পারে উড়ানের সময়সূচি, পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে একাধিক উড়ান বাতিলও করা হতে পারে। সম্ভাব্য অসুবিধার কথা জানিয়ে যাত্রীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছে এই তিন বিমান সংস্থা।
এই পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এক বিশেষ প্রযুক্তিগত সমস্যাকে। বিমান নির্মাণকারী সংস্থা এয়ারবাস আগে থেকেই সতর্ক করেছিল যে, সৌর বিকিরণের প্রভাবে তাদের এ৩২০-গোত্রের বিমানগুলিতে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ‘এলিভেটর এইলেরন কম্পিউটার’-এর (ইএলএসি) তথ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ওই বিমানগুলিকে অবিলম্বে পরীক্ষা, সফ্টওয়্যার আপডেট এবং হার্ডওয়্যার পুনর্বিন্যাস না করলে উড়ান ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। সম্প্রতি বিদেশে এয়ারবাসের এক বিমানে এই ধরনের সমস্যা ধরা পড়ায় মাঝপথে বিমান নামিয়ে দিতে হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। এরপরই এয়ারবাস ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলিকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।
সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, দেশে মোট প্রায় ৫৬০টি এয়ারবাস এ৩২০ সিরিজের বিমান সচল রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২০০ থেকে ২৫০টি বিমানে বিশেষজ্ঞদের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে এবং হাজার হাজার যাত্রীর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের আন্তর্জাতিক উড়ানেও প্রভাব পড়তে পারে।
যদিও ঠিক কতগুলি বিমান এই সমস্যার আওতায় পড়েছে তা বিস্তারিতভাবে জানায়নি কোনও সংস্থা। একটি সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস বর্তমানে এই ধরনের ৩১টি বিমান ব্যবহার করছে। তবে ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের নির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সৌর বিকিরণের তীব্রতা আরও কিছুদিন স্থায়ী থাকলে নজিরবিহীন বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
আপাতত প্রতিটি বিমানই ধাপে ধাপে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত ত্রুটি দূর না হওয়া পর্যন্ত বহু বিমানকেই অস্থায়ীভাবে পরিষেবা থেকে সরিয়ে রাখা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিমানবন্দর-সংযুক্ত আধিকারিকরা। ফলে যাত্রাপথ, সময়সূচি এবং পরিষেবায় সামগ্রিক গোলযোগের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।