দেশে ফিরলেন মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন-এ ১৮ দিনের সফল মিশনের আগেই পৃথিবীতে ফিরেছিলেন মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। রবিবার প্রথমবারের জন্য ভারতের মাটিতে পা রাখলেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট ও মহাকাশচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। শুভাংশুকে স্বাগত জানাতে দিল্লি বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। উপস্থিত ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। শুভাংশুর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন তাঁর স্ত্রী-সন্তান। দিল্লি বিমান বন্দরে এদিন তাঁদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়।

নাসা, অ্যাক্সিওম স্পেস এবং স্পেসএক্স-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত অ্যাক্সিওম-৪ মিশনে অংশ নিয়েছিলেন শুভাংশু। এই ঐতিহাসিক যাত্রার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ অভিযানে আরও এক ধাপ এগিয়েছে ভারত। ভারতে আসার বিমানে বসে ইনস্টাগ্রামে এক আবেগঘন বার্তায় শুভাংশু লেখেন, ‘ভারতে ফেরার বিমানে বসে আমার মনে একসঙ্গে অনেকগুলো অনুভূতি কাজ করছে। দুঃখ হচ্ছে সেই অসাধারণ মানুষদের ছেড়ে আসতে, যাঁরা গত এক বছরে এই মিশনে আমার পরিবার ও বন্ধু ছিল। আবার একইসঙ্গে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে, কারণ এবার আমি প্রথমবার মিশনের পর দেশে ফিরে আমার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে পারব।’

উত্তর প্রদেশের লখনউয়ের বাসিন্দা শুভাংশু গত এক বছর ধরে আমেরিকার বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সহকর্মীদের সঙ্গে গড়ে উঠেছিল গভীর বন্ধুত্ব। মার্কিন সহকর্মীদের মধ্যে তিনি ‘শুক্স’ নামেই পরিচিত ছিলেন। তাঁর কথায়, এই অভিজ্ঞতা ছিল জীবনের এক অমূল্য অধ্যায়। শুভাংশুর এই মহাকাশ যাত্রার নেতৃত্বে ছিলেন বর্ষীয়ান মহাকাশচারী ও কমান্ডার পেগি হুইটসন। তাঁর প্রসঙ্গে শুভাংশু বলেন, ‘বিদায় জানানো কখনওই সহজ নয়। কিন্তু জীবন মানেই এগিয়ে চলা। যেমন আমার কমান্ডার পেগি হুইটসন বলেন, স্পেসফ্লাইটে পরিবর্তন একমাত্র অবিচল জিনিস। আমি মনে করি, এটা জীবনের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।’


ভারতে ফেরার পরে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে গগনযান প্রকল্প সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনা হবে বলেই সূত্রের খবর। গগনযানের জন্য শুভাংশুকে বিবেচনা করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে। নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের শেষাংশে তিনি হিন্দি ছবির একটি জনপ্রিয় গান উদ্ধৃত করে লেখেন, ‘শেষমেশ বলতে হয়, ইউ হি চলা চল রহি, জীবন গাড়ি হ্যায় সময় পাহিয়া।’