বিশ্বের দরবারে বাংলার হয়ে, বাঙালি হয়ে কলার তুললেন রিচা ঘোষ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ঝুলন গোস্বামীরা যে স্বপ্নভঙ্গের পীড়া নিয়ে নীল জার্সি ছেড়েছিলেন , সেই স্বপ্ন সত্যি করলেন শিলিগুড়ির মেয়ে। প্রথম বাঙালি যিনি ছুঁয়ে দেখলেন ক্রিকেট বিশ্বকাপ। বৃষ্টির কারণে রবিবার ঘণ্টা দুয়েক দেরিতেই শুরু হয়েছিল ম্যাচ। কিন্তু ম্যাচ যখন শেষ হল, গভীর রাতেও তখন যেন সূর্যোদয়ের আলো। ১৯৮৩ এর পর ২০২৫, দ্বিতীয়বার প্রথম বিশ্বজয়ের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। সেবার বিশ্বকাপ এনেছিলেন কপিলরা এবার আনলেন হরমন, স্মৃতি, রিচারা।
সঙ্গে সঙ্গে এই রাতে তৈরি হল একাধিক ইতিহাস। মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ, বাঙালির প্রথম বিশ্বকাপ আরও কত স্বপ্নের প্রথম রাত হয়ে থাকল বাদশাহ-র জন্মদিনের এই ২রা নভেম্বরের রাত তা তো সময়ই বলবে। রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে রিচার ৩৪ রান অবদান রাখল। জয়ের পর কাঁপা গলায় বাংলার মেয়েটা বলল, ‘জীবন বাজি রেখে মাঠে নেমেছিলাম, সকলে একটাই কথা বলেছিলাম, এটাই প্রতিযোগিতার শেষ দিন। নিজেদের মধ্যে যা আছে পুরোটা উজাড় করে দিতে হবে। নিজের শরীর, শক্তির শেষ বিন্দু সমর্পণ করতে হবে।’ তাইই করলেন রিচারা, জিতলেনও। আজীবন আলস্য নিয়ে টিপ্পনি খেয়ে আসা জাতির প্রতিনিধিত্ব করলেন রিচা, প্রথম বিশ্বকাপ জিতে।
রবিবার রাতে ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে হরমনপ্রীতদের লড়াই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে এক ইতিহাসের সূচনা করল। যা পারেননি ঝুলন, মিতালীরা করে দেখাল হরমন ব্রিগেড। এই ইতিহাসের মুকুটহীন সম্রাট অমল মুজমদার। যিনি এক সময়ের দ্বিতীয় সচিন হয়েই রয়ে গিয়েছিলেন, যাঁর কখনও পরা হয়নি দেশের জার্সি, তাঁর শিক্ষায় ভারতের মেয়েরা ছিনিয়ে আনল বিশ্বকাপ। ডাগআউটে কাঁদলেন রোহিত শর্মা, রাতের আকাশে রাশি রাশি আলো ঢেকে দিল অন্ধকার। ইতিউতি বেজে উঠল জয় জয় জয় হে।