বৃহস্পতিবার দুপুরেই লোকসভায় পাশ হয় ‘জি রাম জি’ বিল। বিরোধীদের তুমুল আপত্তি উড়িয়ে মাঝরাত পর্যন্ত চলে আলোচনা। তারপর রাজ্যসভাতেও সবুজ সংকেত পায় নতুন বিলটি। তারপরই প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেন বিরোধী সাংসদরা। মহাত্মা গান্ধীর নাম মুছে কৌশলে রামনাম ঢোকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা। পুরনো সংসদ ভবনের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে রাতভার ধরনায় বসে কংগ্রেস, ডিএমকে-সহ অন্যান্য সাংসদরা।
লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে রাত জাগেন তৃণমূলের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, সাগরিকা ঘোষ-সহ একাধিক সাংসদ। সেই সঙ্গে মহাত্মা গান্ধী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিও ধরনায় রাখা হয়। ছবির নীচেই লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন সাংসদরা। দিল্লিতে ঠান্ডা থাকায় পর্যাপ্ত গরম পোশাকের বন্দোবস্তও করা হয়েছিল।
‘জিরামজি’ বিল নিয়ে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত আলোচনা হয়েছিল লোকসভায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তা সংসদের নিম্নকক্ষে পাশ হয়ে যায়। এর পর সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তা-ও গড়ায় মধ্যরাত পর্যন্ত। বিরোধীরা বিলটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন। তা করা হয়নি। রাত ১২টা ১৫ পর্যন্ত আলোচনা চলার পরে ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ হয়ে যায় রাজ্যসভাতেও।
এর পরেই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে বিরোধী শিবির। দিল্লিতে বৃহস্পতিবার রাতের তাপমাত্রা ছিল ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মধ্যেই রাতভর ধর্নার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তৃণমূল। দলের বয়স্ক সাংসদদের কথা মাথায় রেখে চাদর, গরম পোশাক এবং লেপ-কম্বলও নিয়ে আসা হয়। অবস্থান-বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
সংসদের সামনে ধর্নায় ডেরেক, ঋতব্রত, দোলা, সাগরিকা ছাড়াও ছিলেন মমতাবালা ঠাকুর, জুন মালিয়া, সুস্মিতা দেব, শতাব্দী রায়, মিতালি বাগেরা। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকেন তাঁরা। কোনও প্ল্যাকার্ডে বড় বড় করে লেখা ছিল, ‘মনরেগার হত্যা’। কোনও প্ল্যাকার্ডে ইংরেজিতে লেখা ছিল, ‘গান্ধীকে যে ভাবে মেরেছিলে, সে ভাবে মনরেগাকে হত্যা কোরো না’।