রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রার কর্মসূচিতে আচমকাই কাটছাঁট, দিল্লি ফিরলেন রাহুল 

কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি – বাংলায় রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রার কর্মসূচিতে আচমকাই কাটছাঁট। বৃহস্পতিবারই দিল্লি  ফিরে গেলেন রাহুল গান্ধি। আগামী ২৬ ও ২৭ তারিখ কিছু কর্মসূচির জন্যই তিনি দিল্লি ফিরে যান বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। কংগ্রেসের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকালে অসম থেকে বাংলায় প্রবেশ করবে রাহুলের নেতৃত্বে ভারত জোড়ো যাত্রা। কিন্তু কোচবিহারের বক্সীরহাটে সংক্ষিপ্ত সভা এবং জেলা সদরে তড়িঘড়ি ‘রোড শো’ করে হঠাৎই দিল্লি রওনা হয়ে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। যদিও তাঁর আচমকা দিল্লি যাত্রার কারণ সম্পর্কে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। 
আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় ।
 
কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৮ তারিখ অর্থাৎ রবিবার বাংলায় ফিরতে পারেন রাহুল। সে ক্ষেত্রে রাহুলের যাত্রা থেকে বাদ পড়তে পারে উত্তরবঙ্গের দুই জেলা, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের একটি অংশ।
 
অসম থেকে বৃহস্পতিবারই কোচবিহারের বক্সিরহাট হয়ে বাংলায় প্রবেশ করে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। কোচবিহারের বক্সীরহাটে তাঁকে স্বাগত জানান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ অন্যান্য নেতানেত্রীরা। বক্সীরহাটে সংক্ষিপ্ত সভার পরে তুফানগঞ্জে প্রাতরাশ করতে যাওয়ার কথা ছিল রাহুল এবং তাঁর যাত্রাসঙ্গীদের। রাতে থাকার কথা ছিল ফালাকাটায়। কিন্তু তাঁরা সরাসরি কোচবিহার শহরের উদ্দেশে রওনা হন। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, হাসিমারা থেকে কপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছে বিমানে এদিনই দিল্লি ফেরেন রাহুল গান্ধি.। সেখানে সাধারণতন্ত্র দিবসে কিছু কর্মসূচির রয়েছে রাহুলের। তারপর ২৭ তারিখ দলীয় কিছু কর্মসূচি রয়েছে রাহুলের। সব কাজ সেরে আবার ২৮ তারিখ বাংলায় এসে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় যোগ দেবেন রাহুল। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানান হয়নি।
 
এর আগে জানা গিয়েছিল, এদিন কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন রাহুল গান্ধি । কোচবিহার সদর মহকুমার খাগড়াবাড়ি, মা ভবানী এলাকায় পদযাত্রা করার কথা ছিল প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির।তারপর আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার। এরপর ২৬ এবং ২৭ তারিখ বিশ্রাম। ২৮ তারিখ ফালাকাটা থেকেই ফের শুরু হওয়ার কথা ছিল ভারত জোড়ো যাত্রার। ২৯ তারিখ কিষাণগঞ্জ হয়ে বিহারে ঢোকার কথা ছিল ওই যাত্রার। আবার ফেব্রুয়ারির শুরুতে ১ ও ২ তারিখ মালদা ও মুর্শিদাবাদে ঢোকার কথা ছিল রাহুলের। সেক্ষেত্রে এখন দেখার, ২৮ তারিখ রাহুল বাংলায় ফিরলে কর্মসূচি অপরিবর্তিত থাকে কিনা ।
 
বৃহস্পতিবার কোচবিহার শহর এবং সংলগ্ন এলাকা রেলগুমটি, মা ভবানী, সদর বাজার, রাজবাড়ি গেট, খাগড়াবাড়ি হয়ে রাজারহাট পর্যন্ত রোড শো করেন রাহুল। খাগড়াবাড়িতে রাহুলের যাত্রাপথের কিছুটা দূরে  একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের লোকজন হাতে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে জমায়েত করেছিলেন। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘বাংলার জন্য দিদি একাই একশো’। যদিও কংগ্রেসের অনেকে মনে করছেন ওই জমায়েতে যাঁরা জড়ো হন তাঁরা আসলে তৃণমূলের।
 
বৃহস্পতিবার রাজ্যে এসে রাহুল বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এসে ভালো লাগছে, এখানে আপনাদের কথা শুনতে, আপনাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। আমায় এত ভালোবাসা দিয়ে স্বাগত জানানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের নেতা কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। এই যাত্রায় ন্যায় শব্দ যুক্ত করা হয়েছে, কারণ দেশে অন্যায় হচ্ছে। দেশে বিজেপি ও আরএসএস ঘৃণা, হিংসা, অন্যায় ছড়াচ্ছে। আর সেই কারণে ইন্ডিয়া জোট একত্রে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চলেছে। আপনাদের  ধন্যবাদ।’ 
যদিও বাংলায় সফরের প্রথম দিনই হঠাৎ করে রাহুল সফর কাটছাঁট করে ফিরে যাওয়ার খবরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কেন রাহুল ফালাকাটায় রাত না কাটিয়ে দিল্লি ফিরে গেলেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কংগ্রেসের একাংশের দাবি, সোনিয়া গান্ধি  আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাহুলকে তড়িঘড়ি দিল্লি ফিরে যেতে হয়। তবে ওই কারণের সমর্থনে কোন তথ্য মেলেনি। সোনিয়া গুরুতর অসুস্থ এমন কোনও খবর নেই।