এসআইআর-এর প্রধান কাজ ভোট চুরিকে আড়াল করা, ফের অভিযোগ রাহুলের

এসআইআর-এর কাজই হল ভোট চুরিকে আড়াল করা। এসআইআর করে সেই কার্যসিদ্ধিই করতে চায় নির্বাচন কমিশন। মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারিতে এক দলীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে এসে সাংবাদিকদের একথা বলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। রাহুলের দাবি, শুধু হরিয়ানা নয়, এর পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়ের নির্বাচনেও ভোট চুরি হয়েছে।

তাঁর কথায়, ‘কয়েকদিন আগে আমি হরিয়ানার তথ্য তুলে ধরেছিলাম। তথ্য থেকে স্পষ্ট, শুধু হরিয়ানাতেই ২৫ লক্ষ ভোট চুরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার অনুমান, হরিয়ানার মতো মহারাষ্ট, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়ের নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে। এটাই বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব বন্দোবস্ত। এসআইআর-এর মাধ্যমে ভোট চুরিকে আড়াল করা এবং তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন।’ রাহুল বলেন, ‘আমাদের কাছে আরও অনেক প্রমাণ আছে। ধীরে ধীরে সেইসব প্রমাণ প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে জনমত ও বুথ ফেরত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, বিজেপি হারতে চলেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সামান্য ব্যবধানে হেরে যায় কংগ্রেস। সেই রাজ্যে ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন রাহুল। এই দাবির সপক্ষে ভুয়ো ভোটারের নমুনাও তুলে ধরেন তিনি। তাঁর দাবি, কমিশন প্রকাশিত ভোটার তালিকাতেই মিলেছে এই তথ্য। রাহুলের দাবি, হরিয়ানায় যা হয়েছে সেটা বিহারেও হবে।


বিহারের পর ৯টি রাজ্যে এবং ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ুর মতো অবিজেপি শাসিত রাজ্য। এই দুই রাজ্যেই আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। এই দুই রাজ্যই এসআইআর-এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বাংলার শাসকদলের তরফে যেমন নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করা হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপিকে জেতাতেই এসআইআর করছে কমিশন। সেই সুরে সুর মিলিয়েছেন রাহুলও।

শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাহুল বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এক যোগে দেশের গণতন্ত্রকে আক্রমণ করছেন। এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ।’ এদিকে ভোট চুরি নিয়ে রাহুল গান্ধীর বারবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আগেই বলেছে, এই সমস্ত অভিযোগ রাহুল সরকারিভাবে দায়ের করেননি। আত্মবিশ্বাস থাকলে রাহুল সেগুলি হলফনামা আকারে জমা দিন। কংগ্রেস এর বিপরীতে পাল্টা জবাবে জানান, রাহুলের অভিযোগ মিথ্যে হলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করুক কমিশন।

এককথায় এসআইআর নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভোট চুরি বিতর্কে ইভিএম, ভোট গণনা, ভোটার তালিকা সব ক্ষেত্রেই কারচুপি, গরমিলের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে আরও সতর্ক হতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। বিস্ফোরক অভিযোগগুলির তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের আশ্বস্ত করার কাজও কমিশনের এমনটাই মনে করছেন তাঁরা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, অভিযোগকারী নেতাদের হলফনামা দিতে চাপ দিচ্ছে কমিশন। আর সেই কারণেই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশন।