সংসদ চত্বরে শ্রমবিধি বিরোধী প্রতিবাদে রাহুল–সোনিয়া

ছবি: এএনআই

শ্রমবিধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিল ‘ইন্ডিয়া’ জোট। সেই কর্মসূচিতে বুধবার সংসদ ভবনের সামনে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনে সামনের সারিতে দাঁড়ালেন রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী। তাঁদের উপস্থিতিতে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াল। শ্রমিক–স্বার্থবিরোধী বলে চিহ্নিত চারটি নয়া শ্রমবিধি কেন্দ্র কেন কার্যকর করতে চাইছে, তার বিরুদ্ধে জোটের দলগুলি একসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সকালে লোকসভা ও রাজ্যসভার কাজ শুরুর আগেই জোটের সাংসদরা সংসদ ভবনের গেটের সামনে জড়ো হন। হাতে পোস্টার, ব্যানার — যেখানে শ্রমিকদের ‘অধিকার হরণ’, ‘নিরাপত্তাহীন কাজের পরিবেশ’, ‘নির্দিষ্ট কর্মসময়ের নিশ্চয়তা না থাকা’–র মতো অভিযোগ তুলে ধরা হয়। রাহুল গান্ধী সেখানে দাঁড়িয়ে জানান, ‘এই বিধি কার্যকর হলে দেশের কোটি কোটি শ্রমিকের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। কেন্দ্র শ্রমিকদের কণ্ঠ রোধ করতে পারবে না।’ সোনিয়া গান্ধীও শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘শ্রমিকের অধিকারের সঙ্গে আপস নয়।’

জোটের নেতারা অভিযোগ করেন, চারটি শ্রমবিধি কার্যকর হলে কর্মস্থলে নিরাপত্তা, ন্যায্য মজুরি, কাজের নিশ্চয়তা এবং সংগঠিত–অসংগঠিত শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাঁদের দাবি, ‘কেন্দ্র আইন পাশ করতে চাইলে আগে শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে পূর্ণ আলোচনা করতে হবে।’ জোটের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সরকারের ‘তড়িঘড়ি’ করে এই বিধি কার্যকর করার চেষ্টা শ্রমিক স্বার্থের বিরুদ্ধে ‘একতরফা সিদ্ধান্ত’।


রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বরাবর শ্রমিক ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে বিরোধী জোট। রাহুল–সোনিয়ার সরাসরি অংশগ্রহণে সেই বার্তা আরও স্পষ্ট। এই প্রতিবাদ শুধু সংসদের ভেতরের লড়াই নয়, আগামী নির্বাচনের আগেই শ্রমিক সমাজের সমর্থন টানার রাজনৈতিক কৌশল বলেও অনেকেই মনে করছেন।

সরকার পক্ষ অবশ্য বলছে, ‘শ্রমবাজারকে সুসংগঠিত করতে এবং দীর্ঘদিনের অস্পষ্টতা দূর করতে এই শ্রমবিধিগুলি আনা হয়েছে।’ কেন্দ্রের যুক্তি, এই সংস্কারের ফলে শ্রমিকদের নথিভুক্তিকরণ আরও সহজ হবে এবং শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। তবে বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, ‘সরকারের কথা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মেলে না।’

প্রতিবাদের পর জোটের নেতারা জানান, সংসদের ভেতরেও এই ইস্যুতে তাঁরা সরব থাকবেন। শ্রমবিধি নিয়ে কেন্দ্র যে পথে এগোচ্ছে, তার বিরুদ্ধে যৌথভাবে আরও বৃহৎ আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতৃত্ব।